বিশ্বের আলোচিত পাঁচ মন্দা

১৯২৯-৩৯ গ্রেট ডিপ্রেশন মন্দা : ১৯২৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে শেয়ারমূল্যের ব্যাপক পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মন্দা। এরপর তার প্রভাব সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৩৯ পর্যন্ত মন্দার অস্তিত্ব ছিল। বিশ শতকের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও সবচেয়ে বেশি দেশে অনেক বেশি প্রভাব ফেলা মন্দা বলে এটিকে আখ্যায়িত করা হয়। এই মন্দায় বিশ্বের জিডিপি প্রায় ১৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার ২৩ শতাংশ হয়ে গিয়েছিল। কোনো কোনো দেশে তা ৩৩ শতাংশেও পৌঁছে গিয়েছিল।

১৯৭৫ সালের মন্দা: ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করায় যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে তেল সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ওপেক। সে কারণে তেলের দাম প্রায় ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। এর প্রভাবে ধাক্কায় জার্মানি ও জাপান ছাড়া শিল্পোন্নত সাত দেশের বাকি দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে যাওয়ায় ১৯৭৫ সালে বিশ্বব্যাপী মন্দা দেখা দিয়েছিল।

১৯৮২ সালের মন্দা: এর পেছনে কয়েকটি কারণ ছিল। ১৯৭৯ সালে ইরান বিপ্লবের সময় তেলের দাম বাড়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য উন্নত দেশের আর্থিক নীতি কঠোর করা ও ল্যাটিন অ্যামেরিকার কয়েকটি দেশে আয়ের চেয়ে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। উন্নত দেশগুলো তাড়াতাড়ি এই পরিস্থিতি থেকে উতরে যেতে সক্ষম হলেও ল্যাটিন অ্যামেরিকা, ক্যারিবীয় ও সাব-সাহারা আফ্রিকার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির গতি ধীর হয়ে গিয়েছিল।

১৯৯১ এর মন্দা: ১৯৯০-৯১ এর উপসাগরীয় যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ প্রদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বল অবস্থা, স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোর ব্যাংকিং সংকট ইত্যাদি কারণে মন্দা দেখা দিয়েছিল।

২০০৯ এর মন্দা: ১৯২৯ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত চলা ‘গ্রেট ডিপ্রেশনের’ পর এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের মর্টগেজ বা বন্ধকী ঋণ বাজারে সংকট দিয়ে শুরু। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও উন্নত দেশের একের পর এক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সংকট শুরু হলে বিশ্বের অনেক দেশেই মন্দা দেখা দিয়েছিল।