সাদিকা রুমনের গুচ্ছ কবিতা

শুশ্রূষা

অতটা ছড়িয়ে যেও না কিছুতে
যতটা ছড়ালে গানেরা বেহাত হয়
অতখানি পুড়েও যেও না নির্বিবাদ
যতখানি পুড়ে গেলে
ফিনিক্স পাখির চোখ ভুলে যেতে হয়
জড়ো হয়ে জমে থাকো
এক আধটা আধুলি মুঠোয় রেখো
নাচের আত্মস্থ মুদ্রা ভুলে গেলে
না-হয় হেঁটেই যেও বাকি পথ
ধীর পায়ে, শ্বাস টেনে টেনে
এক কী দু-দণ্ড বসে যেতে পারো
চোখে ধরে থাকা সূর্যাস্ত দেখার ছলে
কিংবা যদি ভাবো, চিৎ হয়ে শুয়ে
আকাশটা টেনে নেবে বুকের ওপরে,
সে-ও পারো
বোজানো দু’চোখে যদি ঘুম নেমে আসে
একবেলা ঘুমিয়ে নিও-
গত হেমন্তের কোনো এক
দলছুট বিকেল শিয়রে রেখে।

বিস্মৃতিই নিরাময়

বিস্মৃতিই নিরাময় জেনে
মানুষ বিস্মৃত হয় :
সময়ের থলের ভেতর সঁপে দেয়
গনগনে সূর্যের নিচে হেঁটে যাওয়া
অনন্তের মতো দিন,
অনির্বাণ-অনল-আঁচড়,
মাছি ওড়া ক্ষত।
কিংবা
বিস্মৃতির ভানে
ধারাপাত শিখে নেয় প্রবহমান জলের
জেনে নেয়,
ঠিকঠাক কলাকৌশল আর তার
যথার্থ বিন্যাসে জীবন জীবিত থাকে,
থাকে বহমান।

ক্ষয়ের বৃত্তান্ত


কিছু একটা খোয়া গেছে
জানালার পর্দা গলে নুয়ে পড়া এক ফালি রোদ
শেষ রাত্তিরের পরিশ্রান্ত চাঁদ চুয়ে নামা মায়া
অহেতুক আলাপ-বিলাপ কিংবা
প্রতীক্ষার স্মরলিপি
জড়োয়া আকাশ থেকে শব্দহীন খসে গেছে অজ্ঞাত, নামহীন কোনো তারা;
অলৌকিক কিছু নয় এ সকল ক্ষয়ের বৃত্তান্ত
ব্যাকরণসম্মতভাবেই জীবন জীবনকে খোয়ায়
পৃথিবী মানুষকে, জীবন সময়কে
আর অনিবার্য ব্যাকরণে মানুষ ক্ষুইয়ে ফেলে অপর মানুষ
খোয়া গেছে, ছিল-নেই অথবা ছিলই না কোনো দিনও, নেই কোনোখানে-
এই সব অনির্বাণ দহন আগলেই জেগে থাকে
নিজেকে জাগিয়ে রাখে
নির্বাণ প্রত্যাশী বিহ্বল মানুষ!

দেখে না-দেখা

যাকে ভাবছি, এ-ই হয়তো ‘তুমি’
সেটা তুমি নও
হররোজ যে আমাকে চোখের অভ্যাসে
করছ মুখস্ত তর্জমা
সে-ও আমি নই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //