যেকোনো মুহূর্তে ক্ষমতার ঋতু পরিবর্তন হবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গুম, অপহরণ, খুন, গুপ্তহত্যা, গলাবাজী ও মিথ্যা ভাষণের অদ্ভুত রসায়ন এই নিশিরাতের সরকার যুবক-তরুণের আওয়াজে বিচলিত হয়ে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। এজন্য বিএনপিকে নির্মূল করতে সকল শক্তি নিয়োগ করেছে তারা। কিন্তু তারা উপলব্ধি করছে না, যেকোনো মুহূর্তেই ক্ষমতার ঋতু পরিবর্তন হয়ে যাবে। পরিবর্তনের ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। মসনদ ধুলোতে লুটোপুটি খেতে থাকবে। মানুষ এখন রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। পুলিশ দিয়ে বিক্ষোভ-প্রতিরোধ দমানো যাবে না।

তিনি বলেন, আল জাজিরায় কুকীর্তি ফাঁস, দুর্নীতির মহাসড়ক নির্মাণ এবং সরকারী হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে দেশ-বিদেশের মানুষ এই মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যে ধিক্কার জানাচ্ছে তাতে সরকারের মাথা বিগড়ে গেছে। সেজন্য তারা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে বিরোধী দল ও চিন্তার মানুষের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুরে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুমের উগ্রগতি চারিদিকে দৃশ্যমান। সেই কারণে সংবিধানে স্বীকৃত সভা-সমাবেশের ওপর সিরিজ আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী। হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে বিএনপিসহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল তথা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। এই উদ্দেশ্য অত্যন্ত ভয়ংকর।

তিনি বলেন, সবাই আশঙ্কা করছে-পুলিশি এই হানার মধ্যে পূর্বের ন্যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুম ও বিচার-বহির্ভূত হত্যার মতো কোনো ঘটনা হতে পারে। কারণ নির্দয় জুলুম ও আওয়ামী লীগ অভিন্ন সত্তা। আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্রের পক্ষে স্বাস্থ্যকর হয়নি।

বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, হত্যার আসামির দণ্ড মওকুফ হয়, দ্রুত জামিন হয়, লুটপাটকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারীরা সহজেই দেশ ছাড়তে পারে, অথচ মানুষ এসবের সমালোচনা করলেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। নিপীড়ন আর হুংকারের স্বরে এখন দেশশাসন চলছে।

রিজভী বলেন, মুশতাক ফাঁসির আসামি নন, তবুও তাকে কারাগারের মধ্যে জীবন দিতে হলো। সরকার মনে করছে, যারা সমালোচনা করে তারা প্রত্যেকেই অপরাধী, সুতরাং কারাগার এবং মৃত্যুই তাদের একমাত্র প্রাপ্য। এই কর্মসূচি নব্য বাকশালী সরকারের বাস্তবায়নের লক্ষ্য। সেজন্যই গণতন্ত্রকে অনুপস্থিত করে বাকশালের মৃতদেহকে ঘাড়ে করে বয়ে বেড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, আজ প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভাকে বানচাল করতে শুরু থেকেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিলো। তারা সভাকে কেন্দ্র করে ক্ষুধার্ত হায়েনার মতো চারিদিকে ওঁত পেতে ছিলো। সভা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই নেতাকর্মীদের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে গ্রেফতারের হিড়িক শুরু করে এবং জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি রফিকুল আলম মজনুকে আটক করে।

এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব, ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবু খালেক টিপু, বন্দর থানা যুবদল নেতা মাহবুব, রুপনগর থানা যুবদলের সহ-প্রচার সম্পাদক মো. ফাহিম, সূত্রাপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সৌরভ রাসেল, কামরাঙ্গীর চর থানা যুবদলের সদস্য দিলগণি, কাফরুল থানা যুবদল নেতা মো. ওয়াহিদ, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম রুবেল, যুবদল নেতা আব্দুল মান্নান, আব্দুর রাজ্জাক, মো. সাগর, ঢাকা জেলা ধামরাই থানা যুবদল নেতা মো. শিপলু, মোশাররফ হোসেন ও কেরানীগঞ্জ থানা যুবদল নেতা মো. রুবেলসহ প্রায় ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানান তিনি।
 
বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবের সামনে যুবদলের সভাতে পুলিশের হামলা ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //