খালেদাকে বিদেশ নিতে আদালতের সম্মতি লাগবে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে হলে আদালতের সম্মতি লাগবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিনউদ্দিন। মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুরে সুপ্রিমকোর্টে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমনটা জানান তিনি।

রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। এখন এটা (বিদেশ নিতে) করতে গেলে আদালতে আসতে হবে, আমার মনে হচ্ছে আদালতে আসতে হবে। তারপরও আমি না দেখে বলতে পারছি না। ওনার (খালেদা জিয়ার) চিকিৎসা কতটুকু প্রয়োজন। এই খানে বাংলাদেশে কী আছে, না আছে, সবকিছু দেখে সরকার বিবেচনা করবে। সরকার যদি প্রয়োজন মনে করে, যদি আইন আনুযায়ী প্রয়োজন হয়, তবে আদালতে আসবে সরকার। কারণ এটা তো সরকারি আদেশ, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে।’

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার অবস্থা সোমবার সকালের দিকে অবনতি হলে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।

খালেদা জিয়া এখনও সিসিইউতেই চিকিৎসাধীন আছেন বলে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল। দলের চেয়ারপারসনের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া চাইছি। সমস্ত দল নয়, সমগ্র জাতি আজকে প্রার্থনা করছেন, দোয়া করছেন। এই দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের শেষ আশ্রয়স্থল, যাকে গণতন্ত্রের একমাত্র প্রহরী বলা যায়, তিনি (খালেদা জিয়া) যেন অতি দ্রুত সুস্থতা লাভ করেন।’

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এ সময় তার বাসভবন ফিরোজায় আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফ করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, খুব লো টাইপের করোনা পজিটিভ এসেছে খালেদা জিয়ার।

এরপর শনিবার (১ মে) চিকিৎসকরা বলছিলেন, শুক্র ও শনিবার মে দিবসের সরকারি ছুটির কারণে এই দুদিন ঠিকমতো খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়নি। ফলে হাসপাতাল থেকে তার বাসায় ফিরতে কয়েকদিন সময় লাগবে।

৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। ২০০৮ সালের ৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদার। পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে করে ১০ বছর। ওই বছরই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে দেশের বাইরে না যাওয়া ও বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করিয়ে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর দুই দফা বাড়ানো হয় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা আছে বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //