গ্রেনেড হামলার আশঙ্কার কথা নেত্রীকে অবহিত করেছিলাম: সাঈদ খোকন

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, বাবার (মোহাম্মদ হানিফ) নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আশঙ্কার কথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেছিলেন।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) ‘২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলার, স্মৃতির পাতা থেকে জানা অজানা দুই একটি কথা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর আলী।

সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমার বাবা মোহাম্মদ হানিফ তথ্য পেয়েছিলেন কোনো একটা কিছু হতে পারে। আমাকে সুধাসদনে পাঠিয়েছিলেন নেত্রীকে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে। নেত্রী সাংগঠনিক সফর শেষে সুধাসদনে আসেন এবং বিশ্রাম নিলেন। কারও সাথে দেখা করছিলেন না। রাত তখন ১০টা পেরিয়ে গেছে। আমি সুধাসদনে উপস্থিত হই। প্রয়াত বজলু ভাইয়ের মাধ্যমে নেত্রীর সাথে দেখা করলাম। তাকে জানালাম, সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে একটি আশঙ্কাজনক বার্তা আপনাকে পৌঁছে দিতে আব্বা আমাকে পাঠিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি তাকে বললাম- একটা সম্ভাব্য হামলা চূড়ান্ত হয়েছে। সূত্রমতে হামলাকারী ঢাকার ভেতরে চলে এসেছে। তাদের সম্ভাব্য হামলার স্থান সুধাসদনের এই বাসা, আপনার যাতায়াতের পথ ও আমাদের অনুষ্ঠানস্থল। আব্বা বলেছেন, যে কোনোভাবেই হোক আপনাকে আমাদের বাসায় (নাজিরা বাজার) চলে যেতে। এখানে আপনি নিরাপদ নন। আমি আরো বললাম- আপনারও অনেক সূত্র থাকে। একটু কনফার্ম করে নেন। যেকোনো মুহূর্তে যে কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’

সাঈদ খোকন বলেন, ‘পরে নেত্রী কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটু হেসে বললেন, এত ভয় পেলে কি রাজনীতি হয়? আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। এদেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনের মায়া সামান্যটুকু তার চেহারাতে দেখতে পাইনি। কত বিশাল সাহসের অধিকারী একটা মানুষ তিনি। নেত্রী আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দিলেন। বললেন, দেখা যাবে কী হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি নিচে এসে বসে রইলাম। আমার মন মানে না। সুধাসদনে আক্রমণ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। আমি দীর্ঘসময় সেখানে বসে রইলাম। মন চাচ্ছিলো না এ অবস্থায় চলে যেতে। নেত্রী আমার কাছে খবর পাঠালেন বাসায় চলে যেতে।’

সাঈদ খোকন বলেন, ‘পরের দিন অনুষ্ঠান শুরু হলো। প্রথম বোমাটি এসে পড়ে ঠিক আমার কাছাকাছি। মনে হলো দুটি পা ঝলসে গেলো। একটা লাফে ট্রাকের মধ্যে উঠে গেলাম। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না আমার পা’টা আছে কি না। আমার বাবা মানবঢাল তৈরি করে নেত্রীকে বাঁচালেন। তার শরীরে স্প্রিন্টারের অনেক আঘাত। মাথা থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছে। তাকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এমন একটি হামলা হয়েছে। সেখানে তারেক রহমানের যাবজ্জীবন সাজা হলো। তিনি এখন লন্ডনে আয়েশ করে জীবনযাপন করছেন। তার শুধু যাবজ্জীবন নয়, দেশে ফিরিয়ে এনে রায় পুনর্বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। একজন আহত ও বাবা হারা পরিবারের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে আমার এই দাবি।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //