‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশে দাঙ্গা লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে’

স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগিয়ে দেশের সকল অর্জন ম্লান করে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। 

শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) সেক্টরে ‘৫০ বছরের অর্জন,ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও  উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, পানি, নিরাপত্তা, অবকাঠামো ও যোগাযোগসহ সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মুসলিম-হিন্দু, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে কাজ করছে বলেই দেশ আজ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল। কিন্তু দেশের শক্ররা এই ঐক্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে।’ 

তিনি বলেন, দেশ যখন উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং কোনভাবেই অগ্রযাত্রাকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না, তখন এই অপশক্তি ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা শুরু করেছে। মন্দিরে কোরআন শরীফ রেখে নাটক সাজিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছেন। দাঙ্গা লাগিয়ে অশান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে ব্যর্থ বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। 

পাকিস্তানের মদদ-পুষ্ট ও প্রেতাত্মারা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার দু:স্বপ্ন দেখছে উল্লেখ করে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ তাদেরকে উচ্ছিষ্ট হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে। 

তিনি জানান, গুণ্ডা ও সন্ত্রাসীদের মাঠে নামার যখন কোনো অবস্থা নেই তখন তারা ধর্মকে ব্যবহার করে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। যে কৌশল পাকিস্তানিরা স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহার করেছিলো।

‘মন্দিরে কি করে কোরআন শরীফ গেল! কারা রেখেছে, কারা ভিডিও করে সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেছে ও পুলিশকে টেলিফোনে কে জানিয়েছে’  এসব প্রশ্ন উত্থাপন করে তাজুল ইসলাম বলেন, প্রকৃত ঘটনা জাতির সামনে উন্মোচন করা হবে। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

দেশের ৯৮ ভাগ এবং বস্তি এলাকার ৭০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানির আওতায় এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন সেক্টরে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এসডিজি-২০৩০ এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে এ সরকার পরিকল্পনা মাফিক কাজ করছে বলেও তিনি জানান।

সেমিনারে এলজিআরডি মন্ত্রী উল্লেখ করেন, দেশের ভবিষ্যৎ পানির চাহিদা পূরণে ন্যাশনাল ওয়াটার গ্রিড লাইন নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও ট্রান্স-বাউন্ডারি ওয়াটার গ্রিড লাইন নিয়েও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 

তিনি জানান, রাজধানী ঢাকা শহরকে একটি আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও বসবাসযোগ্য নগরী গড়তে খালগুলো ওয়াসার কাছ থেকে সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর-পরই দুই মেয়র চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে। অসংখ্য খাল ইতোমধ্যে দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করেছে। দুই সিটি মেয়রের মাধ্যমে ঢাকার পরিবর্তন আনা সম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, ওয়াটার এইড’র দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক, কান্ট্রি ডিরেক্টরসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //