ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থিতা নিয়ে বিশৃঙ্খলা

দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনী মাঠ। দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৮৪৮টি ইউপিতে ভোট হবে আগামী ১১ নভেম্বর। তৃতীয় ধাপের ১০০৭ ইউপিতে ভোট হবে ২৮ নভেম্বর। ভোটের সময় যত ঘনিয়ে আসছে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতরা নির্বাচনী এলাকায় উত্তাপ ছড়াচ্ছেন। দলীয় প্রার্থিতা নিয়ে নানা বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। বেশ কিছু এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদলের ঘটনাও ঘটেছে।

দলীয় প্রার্থিতা বদলের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন অনেকটা বিপাকে পড়েছে। কে দলীয় প্রার্থী, আর কে নয়, তা নির্ধারণ নিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের। এছাড়া সপ্তম ধাপের ১০ পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। একজন প্রার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ এসেছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।

দ্বিতীয় ধাপের দেশব্যাপী ৮৪৮ ইউপি নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের সময় কাল শেষ হচ্ছে। আবার অনেক এলাকায় মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা দেয়ার অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।

দ্বিতীয় ধাপে তফসিল অনুযায়ী- চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রার্থী হতে আগ্রহীরা আগামী ১৭ অক্টোবর কাল পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ২১ অক্টোবর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে, প্রত্যাহার করা যাবে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ হবে ১১ নভেম্বর।

অন্যদিকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাগুরা সদরের জগদল এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকালে দুই মেম্বার (সাধারণ সদস্য) প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত বুধবার বগুড়ার শিবগঞ্জের বিহার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী শোভাযাত্রায় হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে শিবগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। 

ইসির নির্বাচন শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের নির্বাচনের দলীয় প্রার্থিতা নিয়ে বেশ বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। অনেক দল প্রার্থী বদল করছে। আবার অনেক ছোট ছোট দল প্রার্থী দিচ্ছে। তবে তাদের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে যে সব কাগজপত্র দিতে হয়। তারা মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় সব কিছু ঠিকঠাক দিচ্ছে না। অনেক প্রার্থী নিজের দলের প্রতীকের নামও ঠিকভাবে লিখতে পারছে না। এর আগে প্রথম ধাপের ভোটের দেখা গেছে একাধিক ব্যক্তি দলীয় প্রার্থী হিসেবে নিজেদের দাবি করেন। পরে অবশ্য দলীয়ভাবেই তার সমাধান হয়েছে। তবে এবারেও বেশ কিছু এলাকায় দলীয় প্রার্থী বদলের ঘটনা ঘটেছে। দেখা যাক কী হয়। 

পৌরসভা নির্বাচনে একজন প্রার্থী অপহরণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, বিষয়টি আমরা মিডিয়ায় দেখেছি। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে এই বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আসলে কী ঘটেছে। কমিশন এটা জানতে চেয়েছে। 

প্রার্থী বদলের বিষয়ে ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বশেষ শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। ১০ অক্টোবর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড থেকে একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তার নাম ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পরিবর্তন করে মাহমুদপুর ইউনিয়ন নতুন করে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এছাড়া প্রার্থী বদলের ঘটনা ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ও ক্ষেতলাল উপজেলার আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের। এই দুই ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। 

ইসির নির্বাচন শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল কাল শেষ হবে। তবে শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে প্রার্থী বদলের ঘটনা ঘটেছে। তবে দুই প্রার্থী যদি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তবে দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হতে পারে। তবে আসলে প্রার্থী বদল হলে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //