বাস ভাড়া বৃদ্ধির পদক্ষেপ অমানবিক

ডিজেলের দাম একসঙ্গে ১৫ টাকা বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বৈঠক শেষে আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, ডিজেলের দাম একসঙ্গে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করা ঠিক হয়নি। যারা এটা করেছেন, তাদের উচিত ছিল তিনপক্ষীয় একটা আলোচনা করে। সবকিছু নির্ধারণ করা। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির আগে বাস মালিক ও জনগণের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসা ঠিক হতো।

এ সময় পাশ থেকে জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, রাজস্ব কমিয়ে দিলেই হতো। ভারত তো করেছে।

আমু বলেন, ‘বাস ভাড়া বাড়ায় জনগণের যে দুর্ভোগ হয়েছে তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা মনে করি বাস ভাড়া বৃদ্ধির পদক্ষেপ অমানবিক। অত্যন্ত বেশি ভাড়া হয়েছে। আমরা জানি অধিকাংশ বাসই গ্যাসে চালিত। কিন্তু গ্যাসের দাম বৃদ্ধি না হওয়ার পরেও সব বাসের ভাড়া বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ ১৪ দল পায় না বলে জানান তিনি।'

তিনি বলেন, ‘হয় গ্যাসচালিত বাসের সিলিন্ডার নিয়ে নিতে হবে। না হয় এই বাস ব্যবস্থাই বাদ দিতে হবে। সবাইকে তেলে আনতে হবে। না হলে, বাস ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে জনগণের যাতে স্বস্তি হয়। সে রকম বাস ভাড়া নির্ধারণের দাবি করছি।'

দ্রব্যের দাম কমাতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে সরবরাহ ও উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও অহেতুকভাবে দফায় দফায় পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সেদিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বসে তা সুরাহা করার আহ্বান জানান তিনি। 

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় ১৪ দলীয় জোট উদ্বিগ্ন বলে জানান মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যাতে সহিংসতা বন্ধ হয়। নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে যাতে জনগণ ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারে। আমরা বলছি না যে, নিরপেক্ষতা সরকারের পক্ষ থেকে নষ্ট হয়েছে। মনে করি সহিংসতার কারণে মানুষ ভোট দিতে ভীত। সহিংসতা বন্ধ করা হোক। যাতে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ ও কঠোর হতে হবে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, সম্প্রদায়িকতার ঘটনায় সারাদেশে উদ্বিগ্নতা সৃষ্টি করেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, একটি সম্প্রদায়কে সামনে রেখে ঘটনাটি ঘটেছে। মূলত আমাদের রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িকতা, সেই ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে নষ্ট করার জন্য। দেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এ কাজটি তারা করেছে। আমরা মনে করি সরকারকে তদন্ত স্বপেক্ষে এর বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তিনি জানান, ১৪ দলের পক্ষ থেকে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশের বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //