কে হবেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি?

আর মাত্র একদিন পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১২ মে) ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। যোগ্য ও ত্যাগী নেতারা এবার নেতৃত্বে আসতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সবার মাঝেই উৎকণ্ঠা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর মনোনীতদের মধ্য থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বেছে নেওয়া হবে।

জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য কমপক্ষে ১২জন নেতা নানাভাবে তদবির করছেন। জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সড়ক ছাড়াও জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার মহাসড়কগুলোতেও তাদের নাম ও ছবি সম্বলিত বড় বড় বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও তোরণ দেখা যাচ্ছে। অনেকে পছন্দের নেতাদের নামে পোস্টার লাগিয়ে নিজেদের পরিচিতির প্রচারণাও করছেন। 

এ পর্যন্ত তৃণমূলে সভাপতি পদের জন্য প্রত্যাশীরা হলেন- আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল হক ভোলা মাস্টার, আরেক সহ-সভাপতি শামীম হক, যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার ফারুক হোসেন এবং ফরিদপুরের আওয়ামী রাজনীতির অন্যতম ব্যক্তিত্ব সাবেক সংসদ সদস্য ইমামউদ্দিন আহমেদের জ্যেষ্ঠ সন্তান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সদস্য সাইফুল আহাদ সেলিম।

সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রত্যাশীরা হলেন- বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বেগম ঝর্ণা হাসান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা উপপরিষদের সদস্য কামরুজ্জামান কাফি, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অমিতাভ বোস, আওয়ামী লীগ নেতা মো. লিয়াকত হোসেন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু, সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অনিমেষ রায় এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শওকত আলী জাহিদ।

তৃণমূলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনের মাধ্যমেই দলের নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে। তবে এক্ষেত্রে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই শেষ কথা। আগামী বছর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল ও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের এ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। দল পরিচালনায় সাংগঠনিকভাবে অভিজ্ঞরাই দলীয় সভানেত্রীর মনোনয়ন পাবেন এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী এতে উপস্থিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে এ সম্মেলনের শুধু মঞ্চ তৈরিতেই ব্যয় করা হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা। এক লাখ পাঁচ হাজার বর্গফুট জুড়ে তৈরি এ মঞ্চে ১৫ হাজার চেয়ারে বসার ব্যবস্থা থাকছে। বৈশাখী ঝড়ের বিষয়টি মাথায় রেখে মূল মঞ্চের কিছু অংশ জুড়ে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ মঞ্চ। যাতে কালবৈশাখী ঝড়েও মঞ্চ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের এবারের এই ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার কাজী জাফরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। আর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, সম্মেলন বাস্তবায়নে সবধরনের প্রস্তুতিই গ্রহণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবকিছু ভালোভাবেই চলছে। 

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, সম্মেলন সফল ও সার্থক করে তুলতে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সর্বাত্মক শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। কোনো প্রকার অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো না বলে আশা করছি। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছে। আশা করছি একটি সফল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //