এলডিপি ছাড়লেন দুই শতাধিক নেতা

কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে শতাধিক নেতা পদত্যাগ করেছেন। 

দলটির সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী ও যুগ্ম মহাসচিব তমিজউদদীন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ বৃহস্পতিবার (১২ মে) এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পদত্যাগকারী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী, উপদেষ্টা পুষ্টিবিদ ফরিদ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মো. ইব্রাহিম রওনক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি এএসএম মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. আফজাল হোসেন মোর্শেদ, যুববিষয়ক সম্পাদক শফিউল বারী রাজু, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক লস্কর হারুনুর রশিদ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন মণ্ডল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান, গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বাবু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ ফয়সাল ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন পাঠান বিপ্লব, কাজী কামরুল হাসান, জাহাঙ্গীর আল সানি, হারুন অর রশিদ, ইউনুস বেপারি, রেজওয়ানুল ইফতেখারসহ ১০০ জন, গণতান্ত্রিক ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা বদরুদ্দোজা, সদস্য সচিব মাওলানা আবদুল হাই নোমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মাওলানা আনোয়ার হোসাইনসহ ২৩ জন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হকসহ এলডিপির ২১ জন্য সাধারণ সদস্য।

সারাদেশে দুই শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন জানিয়ে এলডিপির পদত্যাগকারী সহ-সভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা হচ্ছিল না। যে কারণে আমরা পদত্যাগ করেছি। আমাদের বড় বড় দলের পক্ষ থেকে অফার রয়েছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।

ক্ষমতাসীন বলয় থেকে এখনও কোনো অফার পাননি বলেও জানান তিনি।

পদত্যাগকারীদের সম্পর্কে এলডিপির পক্ষ থেকে যে বিবৃতি পাঠানো হয়েছে সেই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, এতেই অলি আহমেদের মানসিকতা ফুটে ওঠে। রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। আমরা পদত্যাগকারীরা যদি দুষ্কৃতকারী হই, অলি সাহেবও বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তা হলে তিনিও কি দুষ্কৃতকারী? এটা আমার প্রশ্ন।

তিনি বলেন, অলি আহমেদের বয়স হয়েছে। আমাদের জন্য তিনি দোয়া করবেন। তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি।

পদত্যাগকারীদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৬ সালে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) আত্মপ্রকাশের পর থেকে নানা সময়ে আমরা দলটির সঙ্গে সক্রিয় হই। দল প্রতিষ্ঠার কেটে গেছে দীর্ঘ ১৬ বছর। এই দীর্ঘসময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেমন উত্থান-পতন এসেছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে ক্রমাগত ‘অবস্থান পরিবর্তন’ করে গেছেন দলের প্রেসিডেন্ট অলি আহমেদ বীর বিক্রম। রাজনৈতিকভাবে নিয়মিত বিরতিতে রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টানোর কারণে এরইমধ্যে দলের প্রতিষ্ঠালগ্নের জ্যেষ্ঠনেতারা তার নেতৃত্ব ত্যাগ করেছেন। দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারা থেকে এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ সরে আসেননি, বরং দিনে-দিনে একটি সুপরিচিত রাজনৈতিক দলকে তিনি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছেন।

অলি আহমেদকে কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের বলে উল্লেখ করে তারা জানান, দল পরিচালনার ক্ষেত্রে অলি আহমেদ চূড়ান্ত অর্থে ‘কর্তৃত্ববাদী ও আত্মঅহঙ্কারে’ নিমগ্ন একজন মানুষ। অথচ, জাতীয়তাবাদী শক্তির আধার হিসেবে শত-শত তরুণ-যুবক ও রাজনীতিক তার নেতৃত্বের ছায়াতলে এসেছিল। কিন্তু দিন যত বয়েছে, তার পরিবর্তিত রূপ দেখে নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছে, ভেঙে পড়েছে।

অপরদিকে এলডিপির যুগ্ন মহাসচিব সালাউদ্দিন রাজ্জাকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে বলা হয়, ‘লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম ও ড. রেদোয়ান আহমদ এ দলের মূল আর্কষণ। তাদের নেতৃত্বে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এলডিপি আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী।

দল ছাড়া নেতাদের ব্যাপারে এলডিপির স্পষ্ট ভাষ্য হলো, এরা এলডিপি থেকে বিদায় নেওয়ায় এলডিপি পূত-পবিত্র হয়েছে। দেশে এলডিপির লাখ লাখ নেতা-কর্মী। যারা দল ছেড়েছে এদের চলে যাওয়ায় দলের কিছু যায় আসে না। এলডিপি থেকে অতীতে যারা বিদায় নিয়েছে তারা কেউ রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি এরাও পারবে না। ড. অলি আহমেদ ও ড. রেদোয়ান আহমেদ হচ্ছেন দলের ফোকাস। এর বাইরে কে গেলো, কে এলো তা বিবেচ্য না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //