ছাত্রলীগে পদপ্রত্যাশীদের শেষ সময়ের দৌড়ঝাঁপ

দীর্ঘ চার বছরের অপেক্ষা শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পরপর ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে বিভিন্ন কারণে মেয়াদপূর্তির দুই বছর পর এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ কারণে এবার সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীর উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা বেশি দেখা যাচ্ছে।

এদিকে ৩০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে ইচ্ছুক নেতাদের শেষ মুহূর্তের লবিং-তদবির আরও জোরদার হয়েছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সুদৃষ্টির আশায় দৌড়ঝাঁপ করছেন পদপ্রত্যাশীরা।

আরেকদিকে সম্মেলনস্থলেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি ঘোষণার গুঞ্জন রয়েছে। সে কারণে আগামী দিনে সংগঠনের দায়িত্বে কারা আসছেন- সেটা নিয়ে পদপ্রত্যাশী নেতাদের পাশাপাশি অনেকের মধ্যেই বিশেষ কৌতূহল দেখা দিয়েছে। তবে নেতৃত্ব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংগঠনের সাংগঠনিক অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা।

সূত্রমতে, পদপ্রত্যাশী নেতাদের অনেকগুলো বিষয়ও আলোচনার উঠে আসছে। বিশেষ করে কোন নেতার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে, কার পারিবারিক ও রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড কী- এ বিষয়েও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। অনেকের ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেকার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমান পদপ্রত্যাশীদের অনেকেই ওই সময় 'ক্ষমতার পালাবদল' হচ্ছে আশঙ্কা থেকে ছাত্রলীগের পদ-পদবি নিতে তেমন একটা আগ্রহ দেখাননি।

নেতৃত্ব নির্ধারণের বেলায় পদপ্রত্যাশীদের বয়সসীমা নিয়েও নানামুখী আলোচনা চলছে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়সসীমা অনূর্ধ্ব ২৭ বছর। কিন্তু নিয়মিত সম্মেলন না হওয়ায় গত তিন সম্মেলনে ছাত্রলীগের বয়সসীমা দু'বছর বাড়িয়ে ২৯ বছর করে দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এবারও তেমনটিই হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে পদপ্রত্যাশীরা নিজেদের মতো করে বয়স বাড়ানো এবং না বাড়ানো নিয়ে যুক্তিও দিচ্ছেন।

নেতারা আরও জানান, ২০০৬ সালের সম্মেলনের পর থেকে এ পর্যন্ত কখনোই ২৯-ঊর্ধ্ব বয়সী কাউকে শীর্ষ নেতৃত্বে আনার নজির নেই। তবে এবারের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আলোচনায় থাকা বেশিরভাগ প্রার্থীরই বয়সসীমা অনূর্ধ্ব ২৯-এর কোটায় নেই বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদের দৌড়ে এক ডজন পদপ্রত্যাশী নেতা বিশেষভাবে এগিয়ে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এসব ছাত্রনেতার অনেকের রয়েছে দীর্ঘদিনের ছাত্ররাজনীতির অভিজ্ঞতা।

এবার ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক ডাকসু এজিএস সাদ্দাম হোসেন। এ ছাড়া আলোচনা রয়েছেন ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, আইন সম্পাদক ফুয়াদ হাসান শাহাদাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক সবুর খান কলিন্স, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, আপ্যায়ন সম্পাদক আশরাফুল ফাহাদ, উপকর্মসংস্থান বিষয়ক খাদিমুল বাশার জয়, উপপ্রচার সম্পাদক আল আমিন শেখ, উপগণশিক্ষা বিয়ষক উপসম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না, উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক রশিদ শাহরিয়ার উদয়, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী এবং উপ-সমাজসেবা সম্পাদক শেখ সাঈদ আনোয়ার সিজার।

এ ছাড়া বয়সের বাধ্যবাধকতায় শেষ পর্যন্ত বাদ পড়ে যেতে পারেন বিদায়ী কমিটির সহসভাপতি সোহান খান, সৈয়দ আরিফ হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, মাহবুব খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস আলম, সোহানুর রহমান রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, গণশিক্ষা সম্পাদক আবদুল্লাহ হিল বারী প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //