রাত পোহালেই নতুন নেতৃত্ব পাবে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আগামীকাল মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ৩০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখান থেকেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
গত সম্মেলনগুলোতে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে আঞ্চলিকতার প্রাধান্য থাকছে। সেক্ষেত্রে বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল ও খুলনা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গের প্রার্থীদের প্রাধান্য এবারো থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত কয়েকটি কমিটির তথ্য বিশ্লেষণে এমনটায় দেখা গেছে। এই অঞ্চলের প্রার্থীরাই এগিয়ে থেকেছেন।
জানা গেছে, গত কয়েকটি সম্মেলনের মতো এবারো বয়সসীমা অনূর্ধ্ব ২৯ বছর। এই বয়সসীমার মধ্যেই নেওয়া হচ্ছে প্রার্থীদের খোঁজখবর। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, নেতৃত্বের গুণাবলি, পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত কি না-এসব দেখা হচ্ছে। নেতৃত্ব নির্বাচনে বিতর্কমুক্তদের বেছে নেওয়া হবে। এই যোগ্যতায় আলোচনায় আছেন প্রায় এক ডজন পদপ্রত্যাশী।
বয়সসীমার এ ব্যাপারটি স্পষ্ট হওয়ায় এবার নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে আছেন প্রায় এক ডজন পদপ্রত্যাশী। এদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সাথে জড়িত।
প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন। তিনি এর আগে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বরিশাল অঞ্চল থেকে আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক সবুর খান কলিন্স ও উপগণশিক্ষাবিষয়ক উপসম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না। সবুর খান কলিন্স সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও ফজলুল হক মুসলিম হলের নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর সোলাইমান ইসলাম মুন্না ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাধারণ সম্পাদক, জহুরুল হক হলের দপ্তর সম্পাদক। এছাড়া এই অঞ্চলের আরেক প্রার্থী শেখ ইনান বর্তমান ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন। তিনিও সংগঠনটির শীর্ষ পদে লড়ছেন।
মাদারীপুর অঞ্চল-ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার জামি উস সানি ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের সভাপতি শহিদুল হক শিশির। জামি উস সানি এর আগে বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। যদিও আবরার হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে, শিশির হল সংসদের সাবেক ভিপি এবং হলের সাবেক ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
খুলনা অঞ্চল-কেন্দ্রীয় মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, যিনি সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। এছাড়া একই অঞ্চলের রয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আহসান হাবিব।
এছাড়া ময়মনসিংহ থেকে রয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক রাশিদ শাহরিয়ার উদয়। একই অঞ্চলের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক রাকিব সিরাজীও শীর্ষ পদের আলোচনায় রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলোচনায় রয়েছেন আল আমিন শেখ। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এর বাইরে আরো আছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তিলত্তমা শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক রনক জাহান রাইন।
সার্বিক বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে বয়সের ব্যাপারে গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট বিধান রয়েছে। বিভিন্ন কারণে সেটি বাড়ানো হয়ে থাকে। গত কয়েকটি সম্মেলনে বয়স ২৯ বছর করা হয়েছে। এছাড়াও প্রার্থীর একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, বিতর্কমুক্ত কি না-এসব ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ ছাত্রলীগের সম্মেলন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh