‘মার্কিন কূটনীতিক পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন’

ঢাকা সফরে এসে মার্কিন কূটনীতিক ডেরেক শোলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সরকারকে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ভবনে এক নাগরিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে এই নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখন একজন মার্কিন কুটনীতিক ঢাকায়। তিনি যখন সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন—যে দেশে গণতন্ত্র নিম্নগামী থাকবে, নিচের দিকে চলে যাবে, তাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও নিম্নগামী হবে, সহযোগিতা কমে আসবে।

এর আগে, গতকাল বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আমেরিকান সেন্টারে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সফররত মার্কিন কুটনীতিক ডেরেক শোলে বলেন, বিশ্বের শক্তিশালী গণতন্ত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পর্ক আছে। বিশ্বের যে কোনো দেশে গণতন্ত্র সংকুচিত হয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা সীমিত করে নেয়। এর মানে এই নয় যে আমরা সহযোগিতা করব না। এর মানে এটাও নয় যে আমাদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ নয়। সম্পর্ক সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনায় আসে ব্যাবসা-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে।

এ প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, এগুলো সবচেয়ে কঠিন কথা। মানবাধিকার প্রশ্নে কোনো আপোষ নাই বলেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ব্যতিত কোনো গণতন্ত্র চলতে পারে না। এই কথাগুলো ঢাকায় বসে তিনি বলেছেন। কত অপমানকর!

বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা তাদের পকেটে চলে গেছে। এজন্য বাংলাদেশের মানুষ যেমন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে, তেমনি বিশ্ববাসী, বিশ্ববিবেক প্রতিবাদ করছে। এই প্রতিবাদ বাংলাদেশে যেমন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, বিশ্ববাসীও জোর করে ক্ষমতায় যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।

ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাস ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। পতন ঠেকাতে কখনও দুটোকেই তারা একত্রে ব্যবহার করছে। গুম-খুন-আক্রমণ-গ্রেপ্তার-ভয়ভীতি দেখানো ইত্যাদিই তাদের এখন ক্ষমতায় টিকে থাকার অস্ত্র।তিনি দেশের বর্তমান অর্থনীতির মডেলকে ‘আওয়ামী লুটপাট মডেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তিনি বলেন, সাধারণ আমদানিকারকরা আজকে ডলারের অভাবে এলসি খুলতে ও পণ্য আমদানি করতে পারছে না। দলীয় লোকেরাই ডলার পাচ্ছে। তারাই এলসি খুলতে পারছে। তারাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।

রাষ্ট্রপতির নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই জানিয়ে আমির খসরু বলেন, যারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে রয়েছেন, তারা নিজেরাই অবৈধ। কারণ, বর্তমান সরকার নির্বাচিত নয়। এখন সরকার পতনই বিএনপির মূল লক্ষ্য বলে জানান বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।

হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাগপার প্রেসিডিয়াম মেম্বার আসাদুর রহমান খান, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //