‘আমেরিকার সঙ্গে টক্কর দিয়ে ইরাক-আফগানিস্তান ধ্বংস হয়েছে’

আমেরিকার সঙ্গে টক্কর দিতে গিয়ে ইরাক, ইরান, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। আজ রবিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অভিযোগে প্রহসনের রায় প্রত্যাহারের দাবিতে’ এ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, পাতানো নির্বাচনের চেষ্টা করলে ক্ষমতাসীনরা মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়বে। আমেরিকার সঙ্গে টক্কর দিতে গিয়ে ইরাক, ইরান, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস হয়েছে। সুতরাং এ জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ জরুরি।

তিনি বলেন, আমেরিকা শুধু শক্তিশালী রাষ্ট্র নয়। আমরা আমেরিকা থেকে তিন হাজার কোটি টাকার মালামাল আমদানি করি, পক্ষান্তরে তৈরি পোশাক, চামড়াসহ রপ্তানি করি সোয়া লাখ কোটি টাকার বাণিজ্যপণ্য। এ ক্ষেত্রে যদি আমরা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে না পারি আমেরিকা, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আমরা অর্থনৈতিক বাজার হারাব। ধ্বংসের মুখে পড়বে দেশের অর্থনীতি।

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে বারবার এটি স্পষ্ট হয়েছে যে দেশে গণতন্ত্র নেই। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত করে বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল। পরে জিয়াউর রহমানই বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে পূর্নবাসন করেছেন। এ জন্য জিয়াউর রহমানের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। কিন্তু তারা জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা দেখেছেন গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের রায়ের পর মাত্র পাঁচ ঘণ্টার নোটিশে লক্ষাধিক মানুষ হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এর থেকে আপনাদের বোঝা উচিত বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে আপনাদের পতনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আছে। আর ২৮ জুলাই প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঢাকায় এসেছে, বিক্ষোভ করেছে, বক্তব্য শুনেছে। এর মধ্যে দিয়ে আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের পতনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের রাষ্ট্রে পরিণত করবেন না। বাংলাদেশকে যদি আপনি বাঁচাতে চান তাহলে শেখ হাসিনা আপনি দেশি-বিদেশি বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে পদত্যাগ করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেন। তাহলেই বাংলাদেশ বেঁচে যাবে। এর বাইরে বাংলাদেশের বাঁচার আর কোনও রাস্তা নেই।

তিনি আরও বলেন, আজ জনতা দেখেছে যে তোমরা বিচার করছো। এই বিচার বাংলাদেশের মানুষ মানে না। কারণ তোমরা অন্যায়ভাবে বিচার করছো। তোমরা অন্যায়ভাবে মানুষকে সাজা দিচ্ছো। এক-এগারোর সময় তোমাদের বিরুদ্ধে সাড়ে সাত হাজার মামলা হয়েছিল। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ১৫টি মামলা হয়েছিল। সেই মামলাগুলো তোমরা গায়েব করে ফেললা। আর বেগম খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজা দিয়েছো। কিন্তু তিনি একদিনের সাজা পাওয়ার উপযুক্ত না যে মামলা তোমরা দিয়েছো। তারেক রহমানকে যে সাজা দিয়েছো, এক ঘণ্টার জন্যও তার সাজা হয় না।

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফয়জুল হক মিলন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমত উল্লাহ প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //