সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে গণমুক্তি জোটের ৪ দফা

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে গণমুক্তি জোট। আজ বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণমুক্তি জোট আয়োজিত সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ। সঞ্চালনা করেন গণমুক্তি জোটের প্রধান সমন্বয়ক আবু লায়েস মুন্না। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন জোটের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, প্রধান মুখপাত্র সাবেক সচিব কাশেম মাসুদ এবং প্রফেসর এ.আর খানসহ জোটের অন্যান্য নেতারা।

সভায় বলা হয়, দেশ আজ এক সন্ধিক্ষণের মধ্য দিয়ে চলছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে এবং বিভিন্ন ফর্মুলা তুলে ধরছে। গণমুক্তি জোটও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির সাথে সম্পূর্ণ একমত। সেই সাথে সুষ্ঠু নির্বাচনে যেসব বাধা রয়েছে তার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতেও সংকল্পবদ্ধ। এখানে উল্লেখ্য যে, গণমুক্তি জোট কোন অনির্বাচিত সরকার সমর্থন করে না। গণমুক্তি জোট নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ও সুস্থ ধারার রাজনীতি চর্চায় আগামী দিনের রাজনীতির সঠিক একটি প্লাটফর্ম।

সভায় বলা হয়, আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণে পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যাবে প্রায় সকল রাজনৈতিক দলই বলে আসছে যে, বিগত ৫২ বছরে কোন শাসক দলই স্বাধীনতার অঙ্গীকার- সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা বাস্তবায়ন করেনি। উল্টো দুর্নীতি-বৈষম্য-মতপ্রকাশে বাধা, টাকা পাচার, ভোট ডাকাতি ও সন্ত্রাস কায়েম করেছে। সে কারণে বড় দুই দলকে ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে বর্জন করতে এবং বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে এসেছে। কিন্তু বর্তমানে ঐসব দল নিজেরা ঐক্যবদ্ধ না হয়ে কথিত ফ্যাসিস্ট দল দুটিকেই ক্ষমতায় রাখতে বা ক্ষমতাসীন করতে শান্তি সমাবেশ বা যুগপৎ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে।

সভায় বলা হয়, আরো দেখা যায়, নির্বাচিত সরকারের অধীনে ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করেছে, আবার ২০১৮ সালে নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এসব কারণে মানুষ শুধুই বিভ্রান্ত হয়, আন্দোলনের সুফল পাওয়া যায় না। নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় একদিকে যেমন সরকার ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে, অন্যদিকে আরো বেশি কর্তৃত্ব পরায়ণ হয়েছে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় গণমুক্তি জোট দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছে যে, বিগত ৫২ বছরের ক্ষমতাসীনদের বাইরে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সচেতন ব্যক্তি সকলকে নিয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। সকল অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির বিপরীতে সরকারও বলছে সুষ্ঠু নির্বাচন দিবে। কিন্তু বিগত দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় সে কথা কেউ আর বিশ্বাস করেনা। গণমুক্তি জোট একটি নির্বাচনমুখী জোট এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনে প্রার্থী দিতে চায়। তবে অবশ্যই সে নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক। এজন্য যেসব দাবি রয়েছে তা হলো-

১. তফসীল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে।
২. মন্ত্রীসভা ছোট করতে হবে এবং মন্ত্রীসভায় বিরোধী দলগুলোর প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে।
৩. স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনতে হবে।
৪. নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে আইন সংশোধন করতে হবে যাতে সরকার নির্বাচন কমিশনের আদেশ নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য থাকে।

গণমুক্তি জোটে যোগ দিয়ে বিকল্প রাজনৈতিক প্লাটফর্মকে শক্তিশালী করা এবং গণমানুষের সার্বিক মুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান জোটের সভাপতি।

সভায় দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য নির্বাচনী প্রার্থীসহ জোটভুক্ত দলসমূহের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //