ভারতের সঙ্গে যে সকল চুক্তি হয়েছে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেছেন, এইসব সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেধে ফেলতে ভারতের দীর্ঘমেয়াদী চক্রান্তের অংশ।
গতকাল শনিবার (২৩ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এমন দাবি করেন।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ বছরের গোলামীর চুক্তি করিয়ে ভারত যেভাবে বাংলাদেশকে বেধে ফেলার চক্রান্ত করেছিল তা বর্তমানেও অব্যাহত আছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়,২০১০ সালের ১২ই জানুয়ারি ভারতের দিল্লিতে সম্পাদিত হাসিনা--মনমোহন চুক্তির ধারাবাহিকতায় হাসিনা সরকার ভারতের সাথে একের পর এক চুক্তি সম্পাদন করে চলেছে যেসব চুক্তির ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখে।ট্রানজিটের নামে চুক্তি সম্পাদিত হলেও ভারত মূলত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাতায়াতের জন্য একে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করছে যা বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষুন্ন করছে।এবারের সমঝোতা স্মারকে যে সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতির কথা বলা হয়েছে তা বঙ্গোপসাগরের ওপর ভারতের রণনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ করে দিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সাম্রাজ্যবাদী ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় নিজ আধিপত্য বিস্তারে প্রতিবেশী দেশগুলোর আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অব্যাহত নাক গলিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই সব দেশে দিল্লির পদলেহী সরকার কায়েমে রয়েছে ভারতের নীল নকশা।রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে ২০০৯,২০১৪,২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারত খোলাখুলি হস্তক্ষেপ করেছে এবং বাংলাদেশের জনগণের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের রাজনৈতিক ক্ষমতাকে আত্মসাৎ করেছে।
ভারত সরকার ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ-কে দায়মুক্তি দিয়ে রেখেছে বলে মন্তব্য করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যে বিএসএফ গত ১৫ বছরে কয়েক শত বাংলাদেশীকে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করেছে।গুলি করে হত্যার পর কিশোরী ফেলানীকে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছে।এজন্য দায়ী বিএসএফ সদস্যের বিচার আজও হয়নি।সরকার এই ভারতের সাথে যে কী সীমান্ত ব্যবস্থাপনা করবে তা বুঝতে জ্ঞানী হবার প্রয়োজন পড়ে না।
“একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের পথ দেখানোর জন্য উভয় দেশই ‘রূপকল্প ঘোষণা’ অনুমোদন করেছে” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে অবিলম্বে ভারতের সাথে সম্পাদিত সকল গোপন চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ করার জোর দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়,বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে 'ঘনিষ্ঠ ও স্থায়ী সম্পর্কের' নামে এইসব চুক্তি বাংলাদেশকে সিকিম কিংবা ভুটানের মর্যাদায় নিয়ে যাবে কিনা তা জানার অধিকার নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জনগণের রয়েছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh