বিগত সরকারের পতনের আগে দেশে নাশকতা ও সহিংসতার দায়ে জামায়াত নিষিদ্ধে বিষয়ে এক মত পোষণ করেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। সেই প্রেক্ষিতে গত ১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, ছাত্রশিবির ও সংশ্লিষ্ট সব অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামীকাল মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও সিনিয়র আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির।
আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
শিশির মনির বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আজ যেহেতু সরকারি ছুটি, সেজন্য কাল (মঙ্গলবার) এ নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে বলে আশা রাখছি।
তিনি আরও বলেন, কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হলো সেটা আমরা জানি না। মনে করছি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ ফ্যাসিবাদি এই সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলন করেছে। যেখানে জামায়াতে ইসলামীও সহযোগী শক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ক্ষেত্রে দলটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এর আগে গত ১ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়– যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই-ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসাবে গণ্য করা হইয়াছে; এবং
যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত রায়কে বহাল রাখিয়াছে; এবং
যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল; এবং
যেহেতু, সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে;
সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসাবে তালিকাভুক্ত করিল। এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh