আ. লীগ নেতাকর্মীদের হাসিনার ‘শাড়ির আঁচল’ ছাড়তে বললেন প্রেস সচিব

প্রবল গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। আজ ৫ জানুয়ারি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ মাস পূর্ণ হলো।

হাসিনার পালানোর পাঁচ মাস পূর্তিতে সরকারের অবস্থান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। আজ রবিবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে হাসিনার পলায়নের স্মৃতিচারণা করে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেছেন প্রেসসচিব। একই সঙ্গে হাসিনার প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করতে দলটির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘হাসিনা ও তার দলের রক্তপিপাসু সদস্যদের হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আপস হবে না। কোনো লবিং হাসিনা ও তার খুনি সহযোগীদের উপকারে আসবে না। পৃথিবী এগিয়ে গেছে। আর হাসিনার পৃথিবী সংকুচিত হয়ে নয়াদিল্লির কয়েকটি ছোট কক্ষে সীমিত হয়েছে। আ. লীগের কর্মীরা যতই হাসিনার শাড়ির আঁচল আঁকড়ে ধরবে, দলের জন্য বিপদ ততই বড় করবে।’

তিনি আরও লিখেছেন,‘হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার করতে সংশোধনপূর্বক বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। গণহত্যায় জড়িত অনেক আ. লীগ নেতাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো শত শত নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে হাসিনাকে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে আমরা এখনো ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাব পাইনি।’

ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম আরও লিখেছেন, ‘তবে জুলাইয়ে বিপ্লবে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যার বিচার ও জবাবদিহির মুখোমুখি করতে আমরা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় নিরলস থাকব। গণহত্যা এবং হাজার হাজার মানুষকে গুম, প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার পাচার, ব্যাংক ডাকাতি এবং হাজার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা ও তার খুনি সহযোগীদের বিচার করা হবে।’ 

তিনি লিখেছেন, ‘হাসিনা আড়ালে থেকে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। তার সমর্থকরা এখনো বিভ্রমে ভুগছেন। আ. লীগের নেতাকর্মীরা এখনো গণহত্যাকে অস্বীকার করছেন। পাঁচ মাস কেটে গেলেও হাসিনা, শেখ পরিবার বা দলের সদস্যদের কোনো অনুশোচনা নেই। এর পরিবর্তে তারা মিথ্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তারা ভারতীয় মিডিয়ার কাছে মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে। তারা লাখ লাখ টাকা খরচ করছে গুজব ছড়াতে।’ 

প্রেস সচিবের মতে, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসার কিছু আশা এখনো আছে তাদের। তবে তার আগে গণহত্যা, খুন, গুম ও লুটপাটের জন্য হাসিনার বিচার চাইতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা হাসিনা ও পরিবারকে ইতিহাসের ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলেছে। এখন আ. লীগের সাধারণ সমর্থকদের কর্তব্য হবে ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং রক্তপিপাসু স্বৈরশাসক থেকে নিজের সমর্থন সরিয়ে নেওয়া।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh