প্রতিনিধি, মেহেরপুর
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৮ এএম | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:২৩ পিএম
বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে খাদিজা আকতার ও বর তরিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
চিরচরিত নিয়ম ভেঙে সঙ্গী–স্বজন নিয়ে বরের বাড়ি হাজির হোন কনে। বিয়ের পর নতুন বরকে নিয়ে ফেরেন বাড়ি। এমনই ব্যতিক্রমী এক ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায়।
সাধারণত বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ি যায় বর। বিয়ে করে নতুন বউ নিয়ে ফেরে বাড়ি। কিন্তু মেহেরপুরের ভিন্নধর্মী এ বিয়ের আয়োজন ঘিরে এলাকার মানুষেরও উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি ছিল না।
কনে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আকতার। আর বর তরিকুল ইসলামের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনীর পৌর শহরে। তরিকুল ব্যবসা করেন। খাদিজা এবার এইচএসসি পাস করেছেন। গতকাল শনিবার বিয়ে হয়েছে তাদের। যৌতুকমুক্ত বিয়ে ও নারী অধিকার নিশ্চিত করতে উভয় পরিবারের আয়োজনে এ বিয়ে বলে জানিয়েছেন তারা।
দুপুরে ছয়টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে স্বজনদের নিয়ে বরের বাড়ি পৌঁছান খাদিজা। এরপর বিয়ে শেষে হয় খাওয়াদাওয়া। সন্ধ্যার দিকে বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন খাদিজা।
বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে খাদিজা আকতার ও বর তরিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
খাদিজার বাবা কামরুজ্জামান বলেন, ‘মেয়ের আবদারেই বিয়ের আয়োজনটা এভাবে করা হয়েছে। যদিও প্রথম দিকে আমার আপত্তি ছিল।’
আর বর তরিকুলের বাবা আবদুল মাবুদ বলেন, ‘পুরুষশাসিত সমাজে অনেক রীতি চালু আছে, যা ভেঙে ফেলা উচিত। এতে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর হবে। তা ছাড়া, বিয়েবাড়িতে কনেপক্ষের একটা বিশাল খরচ হয়। এই বিয়েতে সেটা হলো না।’
নিজেদের চাওয়া পূরণ হওয়ায় বর–কনেও খুশি। খাদিজা আকতার বলেন, পুরুষশাসিত সমাজে বিয়েতে কনেপক্ষকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। সমাজকে তা দেখিয়ে দেওয়ার জন্যই এই ব্যতিক্রমী বিয়ের পরিকল্পনা করেন তাঁরা।
বর তরিকুল ইসলাম মনে করেন, তাদের এই বিয়ের মাধ্যমে সমাজে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। তারা চেয়েছেন বিয়ের একটি নতুন ধারা তৈরি করতে। এতে সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য একটু হলেও কমবে।