নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না: প্রধানমন্ত্রী

বাসস

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:২৪ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০২ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের হিন্ধু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু না ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

শেখ হাসিনা আজ বুধবার বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আমার একটা অনুরোধ থাকবে। আপনারা নিজেরা নিজেদেরকে বার বার করে কেন সংখ্যালঘু বলেন, আমি জানি না। আপনারা কি এই রাষ্ট্রের নাগরিক না? আপনারা কি এদেশের মানুষ না? এটা আপনার জন্মভূমি না?’

‘এটাতো আপনাদের জন্মভূমি। তাহলে নিজেরা নিজেরেকে ছোট করে সংখ্যালঘু করে দেখবেন কেন? এখানে সকলের সমান অধিকার রয়েছে। আপনারা জানেন আমার বাবার (বঙ্গবন্ধু) আদর্শ অনুসরণ করেই আমরা সকল পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই বাংলার মাটিতে যেহেতু আমরা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কাজেই এখানে সকল ধর্মের সম্মান ও অধিকার থাকবে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকালে যখন সকলে একসঙ্গে যুদ্ধ করেছে এক ভাইয়ের সঙ্গে অপর ভাইয়ের রক্ত মাটিতে মিশে গেছে সে রক্ততো কেউ ভাগ করতে যায়নি, এটা ভাগ হতে পারে না।’

ওই সময় ভারতীয় শরণার্থী শিবিরে আশ্রিতদের কে হিন্দু বা কে মুসলমান সেটা দেখা হয়নি। আমরা সেটা ভুলব কিভাবে, বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যে, সংবিধান আমাদের দিয়েছিলেন সেই সংবিধানে তিনি কিন্তু সে কথাই বলে রেখেছিলেন। আমাদের যে চার মূলনীতি সেই মূলনীতিতে কিন্তু এ কথাটাই ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষকতা মানে ধর্মহীনতা নয়। ধর্ম নিরপেক্ষতার অর্থটাই হচ্ছে যার যার ধর্ম সে স্বাধীনভাবে পালন করবে।

তিনি বলেন, সংবিধানের চার মূলনীতিতে যে জাতীয়তাবাদের কথা বলা হয়েছিল সেটাও ছিল প্রতিটি ধর্ম, বর্ণ, জাতি যার যার নিজের অধিকার, সেই অধিকার নিয়ে তারা চলবে। সেটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও বলে গিয়েছিলেন। আর যে কারণে বাংলাদেশে সকল ধর্মীয়রা এক হয়ে কাজ করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার অথবা ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার বলে আমরা যে শ্লোগান দিচ্ছি; আমরা আজকে কিন্তু তা প্রমাণ করেছি। কারণ, প্রতিটি অনুষ্ঠানই ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই কিন্তু উদযাপন করছে; যেটা আজকে আমরা করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকারের পাশাপাশি পূজা-পার্বনে নিজস্ব ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব সময় কঠোর রাখারও পরামর্শ দেন।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাতমানন্দা মহারাজ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, জন্মষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গদে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, মহানগর সার্বজনিন পূজা কমিটি সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত পাল অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh