বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ১১:১৫ পিএম | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৫০ এএম
নাঈম ও শাবনাজ।
আশির দশকে বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় জুটি নাঈম-শাবনাজ। পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনি’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় তাদের অভিষেক। তারপর এই জুটি একে অনেক সুপার-ডুপার হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। দর্শকদের মনে আদর্শ জুটি হিসেবেও জনপ্রিয়তাকেও ধরে রেখেছেন এখনো। ঢাকার নবাব পরিবারের সন্তান নাঈমের সঙ্গে পর্দার জুটি থেকে বাস্তবজীবনে জীবনসঙ্গী হিসেবে জুটি বাঁধেন শাবনাজ। সাম্প্রতিক সময়ে বড় পর্দা কিংবা ছোট পর্দার তারাকাদের প্রেম, বিয়ে এমনকি কদিন যেতে না যেতেই ডিভোর্সের খবরে দর্শকরাও হতাশা ব্যক্ত করেন। মিডিয়াঙ্গনে শাকিব খান-অপু বিশ্বাস কিংবা তাহসান-মিথিলার দাম্পত্যজীবন নিয়ে কম আলোচনা সমালোচনা হয়নি। সেদিক থেকে শিল্পী দম্পতির নাঈম-শাবনাজ তাদের দাম্পত্যজীবনের ২৫ বছর অতিক্রম করলেন ৫ অক্টোবর।
১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর রাজধানীর লালমাটিয়াতে শাবনাজের বাসায় নাঈম-শাবনাজের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে বিগত পঁচিশটি বছর তারা সুখে-দুঃখে একসঙ্গে আছেন। তারা দুই গর্বিত কন্যাসন্তানের মা-বাবা। বড় মেয়ে নামিরা উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডায় আছেন এবং ছোট মেয়ে মাহাদিয়া রাজধানীর উত্তরার আগা খাঁতে পড়াশোনা করছেন। মাহাদিয়া আবার গায়িকা হিসেবেও এরই মধ্যে বেশ প্রশংসিতও হয়েছেন।
দাম্পত্যজীবনের ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় উচ্ছ্বসিত নাঈম-শাবনাজ। এ বিষয়ে নাঈম বলেন, ঘটা করেই আমাদের বিয়ে হয়। মূলত আমার বাবা মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে আমি অনেকটা ভেঙে পড়ি। ওই সময়টা শাবনাজই আমাকে মানসিকভাবে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে, যা আমার জন্য খুব জরুরি ছিল তখন। আর তখনই আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। পরে আমাদের ঘর আলোকিত করে নামিরা-মাহাদিয়া আসে। সবার দোয়ায় আমরা সব সময়ই সুখে ছিলাম, সুখেই আছি। আমার জীবনে শাবনাজের ভূমিকা অনেক বড়, এটা সত্যিই অল্প কথায় ব্যাখ্যা করে বোঝানো সম্ভব নয়। জীবনের ক্রান্তিকালে শাবনাজ আমার হাতে হাত না রাখলে জীবনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমার জন্য সত্যিই কঠিন হতো।
শাবনাজ অনুভূতি ব্যক্ত করেন এভাবে, আজ এতটা বছর পেরিয়ে এসে জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা ভীষণভাবে মনে পড়ছে। মনে পড়ছে বিয়ের দিনটির কথা। খুব তাড়াহুড়ার মধ্য দিয়েই আমরা বিয়ে করেছিলাম। সেই থেকে আমরা সুখে-দুঃখে নানান চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে একসঙ্গে আছি। বেশ ভালো আছি, সুখে আছি। এখন যেভাবে আছি, সারাটাজীবন যেন নাঈমের সঙ্গে এভাবেই কাটিয়ে দিতে পারি এর চেয়ে বড় চাওয়া আর কিইবা হতে পারে। আমার মেয়ে দুটির জন্য সবাই দোয়া করবেন।
১৯৯১ সালের ৪ অক্টোবর এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দেশি চলচ্চিত্রে নাঈম-শাবনাজ জুটির অভিষেক হয়। ঢাকাই চলচ্চিত্রে এই জুটির অভিষেকের মধ্য দিয়ে আরেক রোমান্টিক জুটির সফল যাত্রা শুরু হয়। এরপর একে একে এই জুটি দর্শককে উপহার দেন ‘দিল’, ‘সোনিয়া’, ‘চোখে চোখে’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘অনুতপ্ত’, ‘টাকার অহংকার’, ‘সাক্ষাৎ’, ‘জিদ’সহ আরও বেশকিছু চলচ্চিত্র।
সর্বশেষ তারা দু’জন ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রে জুটি হয়ে অভিনয় করেছিলেন। নাঈম সর্বশেষ ‘মেয়েরাও মাস্তান’ এবং শাবনাজ সর্বশেষ আজিজুর রহমানের ‘ডাক্তার বাড়ি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এরপর নাঈম-শাবনাজ জুটিকে আর চলচ্চিত্রে অভিনয়ে দেখা যায়নি। আলমগীর পরিচালিত ‘নির্মম’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য শাবনাজ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।