চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাব: মিশা সওদাগর

সুলতান মাহমুদ সোহাগ

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০৬:২১ পিএম

মিশা সওদাগর।

মিশা সওদাগর।

গত ২৫ অক্টোবর এফডিসিতে ছিল এক অন্যরকম পরিবেশ। পুরনো ও নতুন শিল্পীদের এক মিলনমেলা। কারণ সেদিন ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০১৯-২১ দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এফডিসির নির্বাচন এলেই এক মিলনমেলা। এই একমাত্র নির্বাচন ছাড়া একসঙ্গে এত শিল্পীর একত্র করা সম্ভব নয়। কেউ কেউ একে অন্যের প্রচারণা করছেন, কেউবা বহুদিন পর পুরনো সহকর্মী পেয়ে আড্ডায় মশগুল। কেউ ছিলেন স্মৃতিচারণে ব্যস্ত। এভাবেই চলছিল সারাদিন। কারও অবশ্য কিছু কিছু অভিযোগও ছিল। সবকিছু মিলে নির্বাচন ভালো হয়েছে এটা সবার দাবি। মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলই জয়ী হয়েছে এই নির্বাচনে। হেরেছে সভাপতি প্রার্থী মৌসুমীসহ অন্যরা।

মৌসুমী ছিলেন স্বতন্ত্র থেকে সভাপতি প্রার্থী। শুরুতে মৌসুমী ও তার সহকর্মীরা অনেকেই একসঙ্গে নির্বাচন করার কথা ছিল। পাশ থেকে সবাই সরে গেলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে একাই লড়াই করে গেছেন প্রিয়দর্শিনী চিত্রনায়িকা মৌসুমী। কিন্তু শেষতক ভাগ্যের কাছে হেরে গেলেন। সভাপতি পদে মৌসুমী পেয়েছিলেন ১২৫ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী মিশা সওদাগর ১০২ ভোট বেশি পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। 

নির্বাচনে জয় প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বলেন, সবার দোয়া ও ভালোবাসায় আবারও জয়ী হতে পেরেছি। চলচ্চিত্রের সব শিল্পী, কলাকুশলী, এফডিসিসহ সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমরা গত দুই বছরে কী করেছি সেটা শিল্পীরা জানেন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্পীদের পাশে থাকাসহ আরও অনেক কাজ করেছি। তার মূল্যায়ন শিল্পীরা করেছেন। আশা করছি, আগামী দুই বছরও শিল্পীদের জন্য, চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাব। আমাদের প্রথম কাজ হবে ইশতেহারে যা যা বলেছিলাম, তার বাস্তবায়ন ঘটানো এবং গতবারের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করা। বরাবরের মতো আমাদের এবারের প্যানেলটিও ভালো। কিছু শিল্পী তাদের সদস্যপদ হারিয়েছে এটা সত্য। তবে আমরা তাদের আপিল করার সুযোগ দিব।

চলচ্চিত্রের এই দূরবস্থা থেকে ফেরাতে কি পদক্ষেপ নিবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সভাপতি বলেন, এই বিষয়টাকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। পরিচালক সমিতি, প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি ও হল মালিকদের সঙ্গে বসব আমরা। কীভাবে এই দূরাবস্থা কাটানো যায় এই বিষয়ে সবার মতামত গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। নতুন শিল্পী তৈরিতেও আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিবো। কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা কাজ করব। এজন্য অবশ্যই সবার সহযোগিতা খুব প্রয়োজন। যারা পরাজিত হয়েছেন তাদের সহযোগিতা আর বেশি করে প্রয়োজন। মৌসুমী আমার খুব ভালো এবং পুরনো বন্ধু। তার সহযোগিতা আমরা নিশ্চয়ই পাব। 

মিশা শুধু একাই নন, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে নিয়ে পুরো প্যানেলে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। জায়েদ খান ২৮৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ইলিয়াস কোবরা পেয়েছেন ৬৮ ভোট। নির্বাচনে জয় প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি শিল্পীদের পাশে থাকার। তারা সেটা উপলব্ধি করেছেন বলেই আবারও আমাদের নির্বাচিত করেছেন। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও শিল্পী তথা চলচ্চিত্রের মানোন্নয়নে কাজ করে যাব। শিল্পীরা যাতে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে আমরা সেই ব্যবস্থা করব। শিল্পীরা কেউ হারেনি। শিল্পীরা কেউ হারে না। মিশা ভাইয়ের মতো আমিও বলতে চাই আমাদের ইশতেহারে আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলোর বাস্তবায়ন করা। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ঠিক রেখে সমিতিকে আরও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। 

এদিকে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে পরাজিত সভাপতি প্রার্থী মৌসুমী শিল্পীদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, অনেক বাধা ছিল। কেউ পাশে ছিল না। তবুও একা লড়ে গেছি। এটাও একটা অভিজ্ঞতা। শিল্পীরা যাকে ভালো লেগেছে তাকে গ্রহণ করেছেন। আমি ভালো কিছু করতে চেয়েছিলাম। তবে শিল্পীদের পাশে আছি এবং থাকব। শিল্পীদের উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য যে কোনো ভালো কাজে আমার সমর্থন থাকবে। নতুন কমিটিকে আমি বলতে চাই কিছু শিল্পীর সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে, যাচাই-বাছাই করে তাদের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিই চলচ্চিত্রের জন্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে, এ জন্য প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি ও পরিচালক সমিতির সুন্দর উদ্যোগগুলোর বিরোধিতা না করে সহযোগিতা করতে হবে। আমি হেরে গেছি বলেই যে বিরোধিতা করব সেটা না। মিশা ভাই আমার খুব ভালো বন্ধু। আমাদের প্রতিনিয়ত কথা হয় এবং যোগাযোগ হয়। আমাদের এই সম্পর্ক অবশ্যই টিকে থাকবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh