মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা

ট্রেনযাত্রা হোক ঝুঁকিমুক্ত

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:০৪ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:১০ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশন এলাকায় সাম্প্রতিক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ১৬ ব্যক্তি নিহত এবং অর্ধ শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনায় আমরা বেদনাহত। কিছুদিন পরপর ট্রেন ও সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মৃত্যু মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। যে ট্রেনকে তুলনামূলকভাবে কম দুর্ঘটনাপ্রবণ বাহন ভাবা হয়, সেখানেও একের পর এক বড় বড় দুর্ঘটনা আমাদের ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। 

বলা হয় ট্রেন চলে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে। একটি ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় সেই লাইনে আরেকটি ট্রেনের প্রবেশের সুযোগ নেই। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিপরীতমুখী ট্রেনকে থামার সংকেত দেওয়া হয়। ফলে সাম্প্রতিক এই দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনাকে ‘দুর্ঘটনা’ বলার সুযোগ নেই। বরং সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিই এখানে স্পষ্ট। বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি ট্রেন স্টেশন মাস্টার সমন্বয় করতে পারেননি। সংকেত অমান্য করে তূর্ণা নিশীথার দুই চালক ট্রেন চালিয়ে নিয়ে যান। ট্রেনটি থামানোর ক্ষমতা গার্ডের থাকলেও তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। 

প্রতিটি দুর্ঘটনার পেছনেই আলাদা কারণ থাকে। তবে আগের দুর্ঘটনাগুলোকে আমলে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত ও তা সমাধানের চেষ্টা করলে এ ধরনের বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। প্রতিটি দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বটে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখে না। আবার রিপোর্ট প্রকাশ করা হলেও এর সুপারিশগুলো আমলে নেওয়া হয় না। রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে চাইলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। 

রেলে টিকিটপ্রাপ্তির ঝামেলা, সময়সূচিতে গোলমাল থাকার পরও বিপুলসংখ্যক যাত্রী এখনো নিরাপত্তা বিবেচনায় রেলপথে ভ্রমণে উৎসাহী হয়। আর সেখানেই যদি একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে, তবে তা অবশ্যই হতাশাজনক। সাম্প্রতিক এই দুর্ঘটনার পর কারণ অনুসন্ধানের জন্য রেলওয়ের পক্ষে দুটি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি এসব কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত সম্পন্ন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই সঙ্গে আহতরা যাতে সর্বোচ্চ ও যথাযথ চিকিৎসা লাভ করে, তা কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তায় ছাড় দিয়ে রেলপথের কাংঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব হতে পারে না। এ ব্যাপারে সংশ্নিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল ও সতর্ক হতে হবে।

সম্পাদকীয়,
সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh