ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:০১ পিএম | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:০৫ পিএম
ফাইল ছবি
তুমুল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিএবি পাসের পরিপ্রেক্ষিতে এবার ভারতকে বিশেষ বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে কেন্দ্র করে কী কী ঘটছে, সেদিকে গভীরভাবে নজর রাখছি আমরা। ধর্মীয় স্বাধীনতায় শ্রদ্ধা এবং সবার সমানাধিকারই আমাদের দুই গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি।’
‘ভারত সরকার যেন সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথা মাথায় রেখে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করে, সেজন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’, বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
ভারতের সংসদের দুই কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিতর্কিত সিএবি পাস হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এতে সই করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এর ফলে বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে।
এই আইন সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট বলে সমালোচনা চলছে ভারতেরই বিভিন্ন মহলে। নতুন এই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশী পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ‘ধর্মীয় নিপীড়নের’ শিকার হয়ে যেসব অমুসলিম ভারতে এসেছেন, তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে আর ভাবা হবে না, বরং তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
সুশীল সমাজ বলছে, আইনটির মাধ্যমে অন্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা সহজেই এ দেশের (ভারতের) নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন, আর তাতে সংকটে পড়বেন আদি বাসিন্দারা। তাছাড়া, নতুন আইনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিক সুরক্ষা উপেক্ষা করা হয়েছে, যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এদিকে শুরু থেকেই সিএবির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে মার্কিন কংগ্রেসের একটি অংশ। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরির পর দেশের সংখ্যালঘুকে নিশানা করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মোদির সরকার সিএবি পাস করেছে বলে দাবি তাদের। তা নিয়ে এ সপ্তাহের শুরুতেই মোদি-অমিত শাহদের বিরুদ্ধে সরব হয় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। বিলটি পাস হওয়ার আগে তারা জানায়, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিপজ্জনক। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাস হলে অমিত শাহ-সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত মর্মে পররাষ্ট্র দফতরের কাছে সুপারিশও করে তারা।