নিয়মিত ব্যায়ামে কমে ক্যান্সারের শঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৫৯ এএম

ছবি: বিদেশি ওয়েবসাইট।

ছবি: বিদেশি ওয়েবসাইট।

নিয়মিত ব্যায়ামের সুফল অনেক। ব্যায়াম হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ অনেক রোগের জন্য উপকারি। গবেষণা বলছে ব্যায়ামে ক্যান্সারের শঙ্কাও কমে।

সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকা 'জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজি'তে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, সপ্তাহে আড়াই থেকে পাঁচ ঘণ্টার ব্যায়াম বিবিধ ক্যান্সারের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে। 

প্রকাশিত গবেষণাপত্রের লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি, ইউরোপের তিনটি ও অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন চিকিৎসা বিজ্ঞানী। তাঁদের মূল কাজ ছিল শুয়ে-বসে অবসর কাটানো আর ব্যায়ামসহ কায়িক পরিশ্রমে ঘাম ঝরাতে অভ্যস্ত, এই দুই শ্রেণির মানুষের মধ্যে ক্যান্সারের বীজ কতটা ডালপালা মেলে তার তুলনামূলক নিরীক্ষণ। 

১০ বছর ধরে সারা পৃথিবীতে ৭,৫৫,৪৫৯ জনের উপর সমীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা দেখেছেন, গড়ে সাপ্তাহিক ঘণ্টা তিনেকের ব্যায়াম ক্যান্সার আক্রান্তদের সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় অনেকাংশে।

কী বলছে গবেষণা

৩২-৯১ বছর বয়সী প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ মানুষের (৫৩% মহিলা) উপর সমীক্ষা চালানো হয়। দেখা যায়, তাদের কেউ-ই আগে থেকে ক্যান্সারের শিকার ছিলেন না। গবেষণাপত্র বলছে, এদের মধ্যে ৫০,৬২০ জন ক্যান্সারের শিকার হন গবেষণা চলাকালীন। 

দেখা যায়, সাত রকমের ক্যান্সারের আশঙ্কা পরিসংখ্যানগত ভাবে কমাতে সক্ষম ব্যায়াম। কোলন ক্যান্সার ৮-১৪%, স্তন ক্যান্সার ৬-১০%, এন্ডোমেট্রিয়াম ক্যান্সার ১০-১৮%, কিডনি ক্যান্সার ১১-১৭%, মায়েলেমা ১৪-১৯%, নন-হজকিন্স লিম্ফোমা ১১-১৮% (মহিলাদের ক্ষেত্রে) এবং লিভার ক্যান্সার ১৮-২৭% কমিয়ে দিতে পারে নিয়মিত ব্যায়াম।

ব্যায়ামের সঙ্গে ক্যান্সারের সম্পর্ক

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, স্থূলতার সঙ্গে ক্যান্সারের যে সম্পর্ক রয়েছে তা এতদিন অনুমান নির্ভর ছিলো। তবে গবেষণা বলছে তা সত্যি।

ক্যান্সার শল্য-চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, 'গবেষণাগত সাতটি ক্যান্সারের পাশাপাশি মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় ও জরায়ুর ক্যান্সার এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ফুসফুস ও প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্যান্সারের সঙ্গে ওবেসিটির সম্পর্ক নিবিড়। ব্যায়াম যেহেতু ওবেসিটি কমায়, তাই নিয়মিত ঘাম ঝরালে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও কমে।' 

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যায়াম স্বাভাবিক বিপাকের সহায়ক। টিউমার জন্মাতে দেয় না। টিউমার জন্মালেও তা পুষ্টি পায় না। এসএসকেএমের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক সতীনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'স্বাভাবিক ভাবে মাংসপেশী যদি শরীরে উৎপাদিত গ্লুকোজের ৭০% পায়, তা হলে ঝামেলা থাকে না। কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রায় তা হয় না। নিয়মিত ব্যায়াম পেশীতে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে এই ব্যাপারটিকে নিশ্চিত করে। ফলে মেদ কমে, কোষ-স্তরে কমে প্রদাহও। পাশাপাশি স্বাভাবিক কোষ অতিরিক্ত অক্সিজেন পায়। আর ক্যান্সারের টিউমার কোষ তার খাদ্য থেকে বঞ্চিত হয়।'

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh