সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৫০ এএম
ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
মৃদুমন্দ বাতাসে ভেসে আসা ফুলের গন্ধে বসন্ত জানিয়ে দিচ্ছে, সত্যি সত্যি সে ঋতুর রাজা। বসন্ত তারুণ্যেরই ঋতু। স্বাগত বসন্ত। প্রাণ খুলে তাই যেন কবির ভাষায় বলা যায়, ‘আহা আজি এ বসন্তে/ এতো ফুল ফোটে/এতো বাঁশি বাজে/এতো পাখি গায়’।
মেঘালয় পাহাড় ও যাদুকাট নদীর তীরে প্রাকৃতির অপরুপ এক প্রান্তর দেশের বৃহত্তর এক শিমুলবাগান। প্রতি বছরের মতোই শীতের শেষে ফাল্গুনে প্রয়াত বৃক্ষপ্রেমী জয়নাল আবেদিনের হাতে লাগানো সারিবদ্ধভাবে সাজানো তিন হাজারের বেশি শিমুল গাছে রক্ত লাল শিমুল ফুল ফুটতে শুরু করেছে। শিমুলবাগানটিতে এখন প্রকৃতি যেন গাইছে ফাগুনের গান।
প্রতিটি গাছের ডালে ডালে শিমুল ফুলের পাপড়ি মেলেছে। যার ফলে বাগানটাকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে ডাকছে দেশ-বিদেশের প্রকৃতিপ্রেমী, পর্যটক ও সৌন্দর্য পিপাসুদের। আর এটি যেন সৌন্দর্য পিপাসুদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
আর আগত পর্যটক, দর্শনার্থী ও প্রকৃতি প্রেমীদের নিরাপত্তা সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি, আগত সকল পর্যটকদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করা হবে।
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাঝামাঝি স্থান মানিগাওঁ গ্রাম সংলগ্ন শিমুল বাগানটির অবস্থান। আগতদের জন্য সম্প্রতি বাগানের মালিকদের পক্ষ থেকে একটি খাবার হোটেল নির্মাণ ও বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা উপকৃত হবেন বলে জানান বাগানের প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদিনের ছেলে সাবেক বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আপ্তব উদ্দিন।
তিনি বলেন, বাবার রেখে যাওয়া এই দৃষ্টিনন্দন শিমুলবাগানটি দেখাশুনা করার পাশাপাশি আরো কিভাবে ভাল রাখা যায় সৌন্দর্য বাড়ানো যায় সে চেষ্টা আছে। এছাড়াও বাগানে আগতদের খাবারের জন্য হোটেল, বসার স্থান নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও এই বাগানটিকে ঘিরে পর্যটকদের স্বার্থে ও জেলার একটি আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্স করা যায় সে চেষ্টাও আমরা পারিবারিকভাবে করছি।
পর্যটক আবুল কাশেম বলেন, এই বাগানটি দেখতে অসাধারণ, এত বড় শিমুলবাগান দেশের কোথাও আর দেখেনি। বাগানের ভেতরটায় গেলে এক অন্য রকম ভাললাগার জন্ম নেয়। হারিয়ে যায় অন্য এক অজানা ভুবনে। নদী, পাহাড় আর শিমুল বাগান প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলন মেলা এখানে।
শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৮ বছরের ব্যবধানে শিমুল চারা এখন ডালপালা পুষ্প পল্ববে এক অতুলনীয় দৃষ্টি নন্দত বাগানে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয় এই বাগানে বিভিন্ন ছবি, নাটক ও গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং হচ্ছে।
কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসারি বিভিন্ন ধরনের বাসে সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ আব্দুল জহুর সেতু থেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে জনপ্রতি একশত টাকা লাউড়েরগড় বাজার। বাজার পার হয়ে যাদুকাটা নদী আর নদী পার হলেই শিমুলবাগান। আবার সুনামগঞ্জ আব্দুল জহুর সেতু পাড় হলে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি দিয়ে তাহিরপুর উপজেলা এরপর বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার হয়ে শিমুলবাগান।