নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২০, ০৮:৫৭ এএম | আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০, ১১:১৮ এএম
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের রফতানি খাতের শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজের গাইডলাইন প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা শ্রমিকদের তিনমাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ২ শতাংশ সুদে এই প্যাকেজ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন।
তিন মাস পর্যন্ত বেতন অবশ্যই কোনো ব্যাংকে বা মোবাইল আর্থিক সেবা অ্যাকাউন্টে দিতে হবে।
গাইড লাইনে বলা হয়েছে, উৎপাদিত পণ্যের অন্তত ৮০ শতাংশ রফতানি হয় এসব প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে অর্থ নেয়ার যোগ্য হবে। পাশাপাশি সংকট চলাকালীন (এপ্রিল, মে ও জুন) তিন মাসের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে হবে।
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে ইতোমধ্যে একটি বিশদ নীতিমালা তৈরি করতে বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নামে ৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করবে এবং তার বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিকারকরা এই তহবিল থেকে ঋণের জন্য আবেদন করবেন।
তার পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মালিকদের নামে ঋণ হিসেবে তহবিল থেকে অর্থ দেয়া হবে। এই ঋণের মেয়াদ হবে দুই বছর। এর মধ্যে ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ড থাকবে। সরকার কোনো ধরনের সুদ নেবে না। যে ২ শতাংশ সুদ শিল্প মালিকদের কাছ থেকে নেয়া হবে, তা ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক সার্ভিজ চার্জ হিসেবে নেবে।
গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের ঘোষণা দেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত মঙ্গলবার নিজ বাসভবনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সাথে বৈঠক করেন।
সেখানে এই টাকা বিতরণের একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়, যা অর্থ মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) নীতিমালাটি সার্কুলার আকারে জারি করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।
পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ-এর সভাপতি রুবানা হক এ বিষয়ে বলেছেন, আমাদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এই টাকা কেবল শ্রমিক ও এ খাতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনে-ভাতাতেই ব্যয় করা যাবে।