জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২০, ০৭:৫২ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১০:০৩ এএম
জামালপুরের দরিদ্র রিকশাচালক হযরত আলী (৬৫) করোনায় অসহায় মানুষের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে গরু বিক্রি করে ১৩ হাজার টাকা দান করেছেন।
জামালপুর পৌরসভার পাথালিয়া এলাকার বাসিন্দা হযরত আলী মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোকলেছুর রহমানের হাতে টাকাগুলো তুলে দেন।
দুই মেয়ে ও দুই ছেলের জনক হযরত আলী পাথালিয়া ছাতার মোড়ে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া মাত্র দুই শতক জমিতে গড়া দো’চালা একটি টিনের ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। দুই মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলেও তার এক ছেলে বেকার। অন্য ছেলে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।
হযরত আলী জানান, বড় মেয়েকে বিয়ে দিতে গিয়ে ধারদেনা করতে হয়েছে। ২০০৬ সালে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে মাসখানেক আগে তিনি কর্মহীন হয়ে পরিবার নিয়ে জামালপুর নিজবাড়িতে চলে আসেন।
তিনি আরো জানান, ঢাকায় রিকশা চালিয়ে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন। সে টাকায় তিনি একটি গরু কিনে বর্গা দেন। লকডাউনের কারণে উপার্জন না থাকায় পরিবারের খরচ মেটাতে সম্প্রতি তিনি গরুটি বিক্রি করে দেন। সেখান থেকে তিনি অর্ধেক টাকা করোনায় তার মতোই কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের সহায়তার জন্য খরচের সিদ্ধান্ত নেন। তারপর তিনি ১৩ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করেন।
তিনি বলেন, আমি নিজেও গরিব মানুষ, রিকশা চালিয়ে খাই। করোনার জন্য আমার মতো অনেক মানুষ খাবার পাচ্ছে না। তাই তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে জমা দিলাম।
এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোকলেছুর রহমান বলেন, রিকশাচালক হযরত আলীর মতো দরিদ্র মানুষ কষ্টার্জিত ১৩ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিলেন, এটা নিঃসন্দেহে সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত। তার এই অবদান জেলা প্রশাসন সব সময় মনে রাখবে।
যথাযথ প্রক্রিয়ায় টাকাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।