রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২০, ০৭:৪৪ পিএম
রাঙ্গামাটির জুরাইছড়ি উপজেলার দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নের খাদ্যসংকটে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ৩৮০ পরিবারের কাছে হেলিকপ্টারযোগে সরকারি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে সেনাবাহিনী। এ কাজে সার্বিক সহায়তা করেছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) দুপুরে জুরাছড়ি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম পাহাড়ি জনপদ দুমদুম্যায় সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের (চট্টগ্রাম সেনানিবাস) সার্বিক সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে আর্মি এভিয়েশনের একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে ইউনিয়নের খাদ্যসংকটে থাকা বগাখালী, আদিয়াছড়া, গণ্ডাছড়া গ্রামে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়। ৩৮০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা ৪ মেট্রিকটন খাদ্য শস্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, লবণ, আলু ও সাবান।
এ সময় সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান, বিজিবি’র রাঙ্গামাটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এএসএম ফয়সাল, সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটি রিজিয়নের মেজর মহিউদ্দিন ফারুকীসহ স্থানীয় হেডম্যান এবং কারবারিরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়নটি প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদ হওয়ায় সেখানে সরকারি খাদ্য সহায়তা চাইলেও পৌঁছানো যায় না। এছাড়া পিছিয়ে এই জনপদটি ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অনেকটা ভারত অংশের হাটবাজারের ওপর তারা নির্ভরশীল। তবে করোনা প্রভাবে সীমান্তে পুরোদমে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে প্রত্যন্ত এই জনপদের কয়েকশ পরিবার। সম্প্রতি নিত্যপণ্যের সরবরাহ না থাকায় অতিরিক্ত দামেও সেখানে খাদ্য সামগ্রী নেয়া যাচ্ছে না বলেও জানান স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দুমদুম্যার আদিয়াছড়া ও গণ্ডাছড়া এলাকার পাড়াপ্রধান সুর কুমার কারবারি বলেন, করোনার গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছিলাম না। এতে করে আমাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিবার ও সন্তানদেরকে নিয়ে আমরা না খেয়ে মরার পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। এমন পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ত্রাণ সরবরাহ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
দুমদুম্যার ইউপি সদস্য পুল রঞ্জন চাকমা বলেন, সব কিছু বন্ধ থাকায় স্থানীয়রা ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছে না, সে কারণেই তাদের অর্থ ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে লবণ ৫০ থেকে ৬০ কেজি, চাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। তাও অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এখন স্থানীয়রা খাদ্য সহায়তা পেল। সীমান্তবর্তী এই তিনটি ওয়ার্ডে প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের বসবাস।
সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান বলেন, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম দুমদুম্যায় ত্রাণ পৌঁছাতে সেনাবাহিনীর সহায়তা চায়। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের (চট্টগ্রাম সেনানিবাস) সার্বিক সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে আর্মি এভিয়েশনের একটি বিশেষ হেলিকপ্টার করে দুমদুম্যা ইউনিয়নের বগাখালী বিওপিতে প্রায় ৩৮০ পরিবারে মাঝে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিতে পেরেছি।