আমার আসলে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি বলে কিছু নেই: পরীমনি

সুহৃদ সব্যসাচী

প্রকাশ: ২২ মে ২০২০, ০১:৩০ পিএম | আপডেট: ২৩ মে ২০২০, ০৫:১৫ পিএম

ঢাকাই ছবির এই সময়ের ক্রেজ পরীমনি। বর্তমানে হৃদি হকের ‘১৯৭১ সেইসব দিন’ ছবির কাজ নিয়ে ব্যস্ত। এই ছবির শুটিং করার সময় হঠাৎ করেই বিয়ের কাজটাও শেষ করে ফেলেছেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ্বসুন্দরী’ ছবিটি। ব্যক্তিজীবন ও ক্যারিয়ারের নানান প্রসঙ্গ নিয়ে পরীমনির সঙ্গে কথা হয় সুহৃদ সব্যসাচীর সঙ্গে। 

নতুন জীবন কেমন কাটছে?

সারাবিশ্ব এখন সংকটের মধ্যে পার করেছে। হঠাৎ করেই বিয়েটা করে ফেললাম। সরকারি নির্দেশ মেনে হোম কোয়ারেন্টিনে বরের সঙ্গেই সময় কাটছে।


বাঙালি আর ১০টা মেয়ের মতোই আমার অভিজ্ঞতা মধুর। রনি খুব অমায়িক আর কেয়ারিং একজন মানুষ। ওর মতো ভালো মানুষ খুব কমই রয়েছে। তাই অল্প কদিনেই প্রেমে পড়ে যাই। আর বিয়েও করে ফেললাম। 

কাউকে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করলেন কেন?

পালিয়ে বিয়ে করার মজা নিতেই পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলেছি। আসলে ১৯৭১ ছবির প্রথম লটের কাজ শেষ হবার পর আমরা দু’জন দু’জনকে খুব মিস করছিলাম। কফিশপে বসে সিদ্ধান্ত নিলাম, আজকেই বিয়ে করব। দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে শিগগিরই সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান করব।

রনির সঙ্গে কীভাবে পরিচয় হলো?

প্রায় ছয় মাস আগে ছবির গল্প শোনানোর জন্য হৃদি আপুসহ রনি এসেছিল আমাদের বাসায়। তখন আমি তাকে খেয়ালই করিনি। শুটিংয়ে গিয়ে কোথায় থাকব, কীভাবে যাব, সেসব নিয়ে তার সঙ্গে প্রথম আলাপ শুরু হয়। এভাবেই একসময় আমাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। পরে শুটিংয়ে গিয়ে ওর সঙ্গে সখ্য বেড়েছে।


গত ৩-৭ মার্চ আমরা ঠাকুরগাঁও জেলায় শুটিং করেছি। ৮ মার্চ ঢাকায় এসে আমি তাকে খুব মিস করছিলাম। পরদিন আমরা দেখা করি এবং সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এরপরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ্বসুন্দরী’ ছবিটিতে আপনি অভিনয় করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন? 

চয়নিকা দিদি অনেক গুণী নির্মাতা। এক কথায় ছবিটিতে কাজ করতে পেরে আমি খুব গর্বিত। করোনার কারণে তারিখ ঠিক হওয়ার পরও ছবিটির মুক্তি পিছিয়ে গেছে। যতটুকু শুনেছি সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে রোজার ঈদে ছবিটি দর্শক হলে গিয়ে দেখতে পাবেন।

‘বিশ্ব সুন্দরী’তে আপনাকে কেমন চরিত্রে দেখা যাবে?

এটা তো বলা যাবে না। চরিত্রের বিষয়ে বলে ফেললে দর্শক হলে গিয়ে কি দেখবে?

আপনি হৃদি হকের প্রথম সিনেমা ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ এ অভিনয় করছেন। ছবিটি সম্পর্কে একটু জানতে চাই।

এটি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমির ওপর নির্মিত একটি ছবি। সরকারি অনুদানের ছবি। প্রথম লটের কাজ শেষ হয়েছে। ৩ মার্চ থেকে শুটিং হয়েছিল ঠাকুরগাঁওয়ে। ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমায় আমার চরিত্রের নাম ‘বিন্তী’, আশা করছি ভালো একটি চলচ্চিত্র পাবে দর্শক। এর বেশি কিছু বলতে চাই না ছবিটি নিয়ে।

গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সিনেমা ‘স্বপ্নজালে’র পর থেকে আপনি অনেক বেছে বেছে কাজ করছেন। এই পরিবর্তনের পেছনে অনুপ্রেরণা কোথায় পেয়েছেন? 

এটার সম্পূর্ণ ক্রেডিট সেলিম ভাইকে দিতে চাই। একদম কোনো কার্পণ্যতা ছাড়াই দিতে চাই। শতভাগ ক্রেডিট তারই। কারণ সেলিম ভাই আমাকে ফিল করিয়েছেন যে একজন আর্টিস্টের ভূমিকা আসলে কি হওয়া উচিত। ফলে ওই বিষয়টি আমি এখন ফিল করি।

একটা ছবি প্রযোজনা করার কথা ছিল আপনার। সেটার খবর কী?

ছবিটি অবশ্যই সামনে আসবে। সেটার কাজ আগাচ্ছে। শিগগরিই ছবিটির আপডেট মানুষ জানতে পারবেন। আর এই মুহূর্তে আমি ১৯৭১ এর কাজ নিয়েই ব্যস্ত আছি, থাকতে চাই।

অন্য কাজের খবর কী?

আমার কাছে আরও কয়েকটা স্ক্রিপ্ট আছে। হাতের কাজগুলো শেষ করে তারপর বাকিগুলোর সিদ্ধান্ত নেব। স্বপ্নজালের পর থেকেই আমি এটা মেইনেটইন করে আসছি। একটা ছবির কাজ শেষ করার আগে অন্য ছবির কাজ করতে চাই না।

অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন ছবির কাজের অগ্রগতি কতটকু হলো?

লঞ্চের মধ্যে একটানা ২০-২৫ দিন ধরে কাজ করেছি। লোকালয় থেকে অনেক দূরে। সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্কও ঠিকভাবে থাকে না। বাইরের কোনো লোকের আসার সুযোগ নেই। আল্লাহর রহমতে সবাই সুস্থভাবে ফিরে এসেছি।


প্রত্যেকদিন ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। আমি মনে করি, বাসার থেকে সেখানেই বেশি নিরাপদ ছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে সেটা ছিল এক রকম জলবন্দি জীবন।

আপনার পছন্দের নায়ক কে? কার সঙ্গে কাজ করতে আপনি বেশি আগ্রহী?

নায়ক পছন্দের ক্ষেত্রে যেহেতু নায়িকার কোনো হাত থাকে না ফলে আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। এটা পরিচালক, প্রযোজকেরাই সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে পছন্দ-অপছন্দ বলেও লাভ নেই।

ওয়েব সিরিজে কি করছেন?

হ্যাঁ, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। বঙ্গবিডির প্রযোজনায় ‘পাফ ড্যাডি’ ওয়েব সিরিজের কাজ করলাম। নতুন একটি অভিজ্ঞতা হলো।

আপনার সফল ছবি ‘রক্ত’র ধারাবাহিকতায় অসফল ছবিগুলো কী কী?

কোন সিনেমাটা ব্যবসা সফল হয়নি বলেন তো? মনে হয় আপনি ‘রক্ত’ দেখেছেন, বাকিগুলো দেখেননি। সফলতা তো আমার ওপর ডিপেন্ড করে না, কোনটা হিট আর কোনটা হিট না- এটা দর্শকদের ওপর ডিপেন্ড করে। আর আমার সব ছবিই ১০০% সফল। 

আপনার প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খাতা সম্পর্কে কিছু বলেন?

আমার আসলে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি বলে কিছু নেই। ও খাতাটা এখনো শূন্য। আমি অনেক ভাগ্যবতী যে, আমার অপ্রাপ্তির খাতাটা এখনো শূন্য।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh