অনুমতি নিয়েই ঢাকা ছেড়েছেন সিকদার গ্রুপের দুই ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২০, ১১:৪৩ এএম | আপডেট: ৩০ মে ২০২০, ০১:১৬ পিএম

রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার

রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার

সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার এবং তার ভাই দিপু হক সিকদার অনুমতি নিয়েই ব্যক্তিগত জেট বিমানে ঢাকা ছেড়েছেন। 

সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন লিমিটেডের একটি উড়োজাহাজকে 'রোগীবাহী' হিসেবে দেখিয়ে তারা ঢাকা থেকে ব্যাংকক গেছেন। 

গত ২৫ মে সকাল ৯টা ১১ মিনিটে তাদের নিয়ে বিমানটি ঢাকা ছাড়ে। বিমানবন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন ও দিপুর বিরুদ্ধে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে গত ১৯ মে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়।

এরপর গত ২৫ মে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই ভাই ব্যাংককে পাড়ি জমিয়েছেন বলে শুক্রবার খবর প্রকাশ করে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার।

এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক এএইচএম তৌহিদ উল আহসান বলেন, গত ২৫ মে সকাল ৯টা ১১ মিনিটে আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন লিমিটেডের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দুইজন যাত্রী ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। সেটা ছিল সরকার অনুমোদিত একটি মেডিকেল ইভাকুয়েশন ফ্লাইট।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে রেগুলার ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে বিশেষ ফ্লাইট চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কেউ অনুমতি নিয়ে এলে সেই ফ্লাইটগুলো পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়। সরকার, দুদক, আদালত কোনো ব্যক্তিকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিলে তাদের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদারের ক্ষেত্রে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা ছিল না। বরং তারা যথাযথ অনুমতি নিয়েই এসেছেন। ফলে বিমানবন্দরে তাদের আটকে দেয়ার সুযোগ নেই।

দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সিকদার গ্রুপের দুই পরিচালক ব্যাংকক যাওয়ার সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোনো আবেদন জানাননি। তারা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাংকক গেছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, ওই দুই ব্যবসায়ী থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাড়ার প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করেছেন।

তবে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রের দাবি, আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন তাদের উড়োজাহাজকে অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে থাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছিল। ২৩ মে ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ-সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হলে তারা ব্যাংককে উড়োজাহাজ অবতরণের অনুমতি দেয়। সেই অনুমোদন দেখিয়ে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে যাত্রীদের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আবেদন করে আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন। এরপর ঢাকায় সিভিল এভিয়েশনের অনুমোদনের পর ২৫ মে উড়োজাহাজটি ঢাকা ছাড়ে। ওই উড়োজাহাজে দুই পাইলট, এক প্রকৌশলী ও দুই ভাই ছিলেন। উড়োজাহাজটি তাদের ব্যাংককে নামিয়ে দিয়ে সে দিনে রাতেই ঢাকায় ফিরে আসে। যদিও এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানে না। 

এদিকে পুলিশের বিশেষ শাখার প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মীর শহীদুল ইসলাম বলেন, রন ও দিপু মেডিকেল ভিসা নিয়েই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে চলে গেছে। তারা কোনো মামলার আসামি কি না সে বিষয়ে আমরা সে সময় অবগত ছিলাম না।

বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের বিশেষ শাখার আওতায় থাকলেও আদালত, তদন্ত কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট কেউ মামলার বিষয়ে অবগত করেনি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তবে পরে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh