পপসম্রাট আজম খানের প্রয়াণের ৯ বছর

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২০, ০৮:৫৪ এএম | আপডেট: ০৫ জুন ২০২০, ০৩:২৪ পিএম

বাংলাদেশের পপসম্রাট আজম খানের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫ জুন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী।

১৯৫০ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আজম খান। তার পুরো নাম মাহবুবুল হক খান। বাবার নাম আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মা জোবেদা খাতুন। তার শৈশবের পাঁচ বছর কাটে আজিমপুর কলোনিতে। তারা ৪ ভাই ও এক বোন ছিলেন।

১৯৫৫ সালে তিনি প্রথমে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তার বাবা কমলাপুরে বাড়ি বানালে সেখানে চলে যান পরিবারসহ। কমলাপুরের প্রভেনশিয়াল স্কুলে প্রাইমারিতে এসে ভর্তি হন। তারপর ১৯৬৫ সালে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন।

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত গাইতেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ২ নম্বর সেক্টরে পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের পর আজম খান ‘উচ্চারণ’ নামে একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। উচ্চারণের গান সংগীত জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৭২ সালে বিটিভিতে একটি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আজম খানের গান তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। 

সেই অনুষ্ঠানের ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচার হয়। ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয় এ দুটো গান। দেশজুড়ে পরিচিতি পায় তাদের গান।

১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে আরেকটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ (রেললাইনের ওই বস্তিতে) শিরোনামের গানটি গেয়ে হৈচৈ ফেলে দেন। আজম খানের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ওরে সালেকা, ওরে মালেকা, আলাল ও দুলাল, অনামিকা, অভিমানী, আসি আসি বলে ইত্যাদি।

ব্যক্তিগত জীবনে সহজ সরল জীবনযাপন করতেন তিনি। ১৯৭১ সালে একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে অংশ নেন আজম খান। ১৯৮২ সালে ‘এক যুগ’ নামে আজম খানের প্রথম অডিও অ্যালবাম বাজারে আসে। তার একক অ্যালবাম সংখ্যা ১৭ এবং দ্বৈত ও মিশ্র অ্যালবাম ২৫টির বেশি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh