চীনা বিজ্ঞাপন ছাড়া আইপিএল অসম্ভব

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২০, ০৩:৩১ পিএম

ভারতজুড়ে চীনের পণ্য বয়কটের ডাক। তারই মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কোষাধ্যক্ষের দাবি, চীনা মোবাইলের বিজ্ঞাপন ছাড়া আইপিএল হবে না।

লাদাখে ভারত-চীন সংঘাত ঘিরে চরম উত্তেজনা। তারই মধ্যে চীনের পণ্য বয়কট করার দাবি উঠেছে ভারতের বিভিন্ন মহল থেকে। সূত্র জানিয়েছে, রেলে চীনা সংস্থার টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। টেলিকম বিভাগকে বলা হয়েছে চীনা কোম্পানির সাহায্য় না নিতে। এই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। সংস্থার কোষাধ্যক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, চীনের স্পনসর ছাড়া আইপিএল হওয়া অসম্ভব।

করোনাভাইরাসের কারণে এ বছরের আইপিএল এখনো বিশ বাঁও জলে। কোনো কোনো মহলের ধারণা, এ বছরের শেষ দিকে ছোট করে হলেও আইপিএল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে ফাকা মাঠে আইপিএলের ব্যবস্থা করা হবে কি না, তা নিয়েও নানা জল্পনা চলছে। সূত্র জানাচ্ছে, শুধু এ বছর নয়, আগামী বছরের আইপিএল নিয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছে বিসিসিআই।

আইপিএলের অন্যতম স্পনসর চীনের মোবাইল কোম্পানি ভিভো। ২০২২ সাল পর্যন্ত বিসিসিআই তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর আইপিএল খাতে ভিভো বিসিসিআইকে ৪৪০ কোটি টাকা দেয়। 

বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমালের বক্তব্য, চীনের পণ্য বয়কট করা একটি আবেগতাড়িত ভাবনা। ভাবনাটিকে আমি সম্মান করি। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা ভাবতে হবে। যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ভিভোর সাথে যেভাবে আমরা চুক্তিবদ্ধ, তাতে এই মুহূর্তে তা বাতিল করা সম্ভব নয়। তাছাড়া চীনের কোম্পানি থেকে সাহায্য নিলে তা চীনের জন্য যতটা লাভের, তার চেয়ে ভারতের লাভ অনেক বেশি। 

ধুমালের যুক্তি, ভিভো ভারতে মোবাইল বিক্রির জন্য আইপিএলের বিজ্ঞাপনে টাকা ঢালছে। বিসিসিআই তার জন্য ভারত সরকারকে কর দিচ্ছে। যার থেকে ভারতের অর্থনীতিই লাভবান হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ওই মোবাইল কোম্পানি ভারতে মোবাইল বিক্রি করেও ভারত সরকারের কোষাগারে কর দিচ্ছে। ফলে শেষ পর্যন্ত ভারতই এর থেকে লাভবান হচ্ছে।

বস্তুত টেলিকম সেক্টরে ভারতের বাজারের বড় অংশ এখন চীনের দখলে। রাতারাতি চীনের পণ্য বয়কট করা হলে টেলিকম সেক্টর বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হবে। ফলে মুখে যে যাই বলুক, সার্বিকভাবে চীনের পণ্য বয়কট করা অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

তাদের বক্তব্য, বর্তমান মুক্ত অর্থনীতির বাজারে এভাবে কোনো দেশকে বয়কট করাও যায় না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকার সরাসরি বয়কটের ডাক দিচ্ছে না। কারণ তারা জানে, এটা সম্ভব নয়। কিন্তু মানুষের ভাবাবেগকেও শাসক দল ব্যবহার করতে চায়। এই মুহূর্তে দেশের ভিতর চীনবিরোধী ভাবাবেগ খুবই শক্তিশালী। তাই বিভিন্ন মন্ত্রী ও দলীয় কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে চীনা জিনিস বয়কটের ডাক দিচ্ছেন। 

সরকারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা বলছে, সরকারিভাবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এতে সাপও মরছে, আবার লাঠিও ভাঙছে না।

ধুমালও একই কথা ঘুরিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন। তার বক্তব্য, যতদিন পর্যন্ত ভিভো ভারতে ব্যবসা করতে পারবে, সরকার তাদের কোনো বাধা দেবে না, তত দিন পর্যন্ত তাদের বিজ্ঞাপন নেওয়াতেও কোনো সমস্যা থাকতে পারে না।

 উল্লেখ্য এর আগে আরেকটি চীনা মোবাইল সংস্থা ওপো ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সির স্পনসর ছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে সেই চুক্তি শেষ হয়েছে। এখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি স্পনসর দক্ষিণ ভারতের একটি শিক্ষা সংস্থা। -ডয়চে ভেলে

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh