বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২০, ১০:০৬ পিএম | আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০, ১০:৩৫ পিএম
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের আউয়ার গ্রামে আয়শা (১৩) নামে এক কিশোরীকে হত্যার পরে শরীরে পাথর, ইট ও বালতি বেধে খালে ডুবিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত কিশোরী ওই গ্রামের দুলাল লাহারীর মেয়ে এবং আউয়ার ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
এই ঘটনায় বুধবার (৮ জুলাই) বিকালে অভিযুক্ত একই পরিবারের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- একই গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক, তার স্ত্রী হনুফা বেগম, ছেলে সাব্বির (২০) ও কিশোর পুত্র সাইদ (১৪)।
বরিশাল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বাকেরগঞ্জ সার্কেল) আনোয়ার সাঈদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে আউয়ার বাজার সংলগ্নের বাসিন্দা দুলাল লাহরীর কিশোর কন্যা আয়েশা আক্তার রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। তাকে খুঁজে পেতে স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে মাইকিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দিয়ে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে বুধবার সকালে আবুল মৃধার ধানের খৈলানে সিদ্দিক মীরার ঘরের পাশে আয়েশা’র একটি জুতা খুঁজে পান তার স্বজনরা। জুতার সূত্র ধরে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম কাজলসহ অন্যারা সিদ্দিক, তার ছেলে সাব্বির, সাইদ ও স্ত্রী হনুফাকে সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এসময় তারা কিশোরীকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। এমনকি কিশোরীকে হত্যার পরে গায়ে পাথর, ইট এবং বালতি বেধে খালের পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে বলে জানায়।
খবর পেয়ে বানারীপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ওই চারজনকে আটক করে। পরে তাদের দেখানো খালে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা দিনভর তল্লাশী চালিয়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।
কিশোরীকে উদ্ধার অভিযানকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বাকেরগঞ্জ সার্কেল) আনোয়ার সাঈদ, বানারীপাড়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শিশির কুমার পাল, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আহমেদ, লবণসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. মহসিন উপস্থিত ছিলেন।
তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র দাবি করেছে, ‘কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় এবং লাশ গুম করতেই শরীরে ইট, পাথর এবং এবং পানিভর্তি বালতি বেধে কিশোরীকে খালে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে।
বানারীপাড়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, ‘আটককৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করলেও কি কারণে এই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড তা জানা যায়নি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তাছাড়া এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।