রিক্তা রিচি
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২০, ০৮:০৮ পিএম | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০, ০৮:১৩ পিএম
বান্দরবনে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো যেন রূপের পসরা সাজিয়ে বসে আছে। বিশেষ করে এখানের ঝর্ণা ও জলপ্রপাতের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় সবাই। এখানে সকাল থেকে রাত অব্দি শোনা যায় ঝর্ণার পানি পতনের শব্দ।
বান্দরবানের উল্লেখযোগ্য ৫টি ঝর্ণা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
জাদিপাই ঝর্ণা
জাদিপাই ঝর্ণা বান্দরবনের জাদিপাই অঞ্চলে অবস্থিত। এটি বান্দরবনের গহীন অরণ্যের মাঝ বরাবর সমতল থেকে আড়াইশো ফুট উপরে অবস্থিত।
আড়াইশো ফুট উপর থেকে অবিরাম ঝরে পড়া পানির মাঝে সূর্যের কিরণ পড়তেই বর্ণিল রঙধনু সৃষ্টি হয়। সত্যিকারের মাদকতা বিরাজ করে এই অপরূপ সৌন্দর্যে। জাদিপাই ঝর্ণাতে কোনো কৃত্রিমতা নেই।
বাকলাই ঝর্ণা
বান্দরবনের পাহাড়ের গভীরে থানচি উপজেলার নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত বাকলাই ঝর্ণা। এই ঝর্ণা ৩৮০ ফুট উঁচু। অনেকে ধারণা করেন এটি হয়ত সবচেয়ে উঁচু ঝর্ণা। অনেক বছর ধরে ট্রেকারদের সুপরিচিত আশ্রয় এই বাকলাই। এর অবশ্য আরেকটি কারণ আছে তা হল এখানে রয়েছে আর্মি ক্যাম্প। যার কারণে অভিযাত্রীরা নিরাপদ বোধ করে এখানে আসতে।
অসাধারণ রুপে আচ্ছাদিত এই মোহনীয় ঝর্ণাটি দেখতে হলে আপনাকে হাতে পাঁচ থেকে সাতদিন সময় রাখতে হবে। তবে আপনার হাঁটার উপর নির্ভর করবে কত সময় লাগবে। থানচি এবং রুমা থেকে এই ঝর্ণাটি দেখতে যেতে পারবেন।
লামোনই ঝর্ণা
বান্দরবনে নয়নাভিরাম যেসকল ঝর্ণা রয়েছে তার মধ্যে তুক অ বা লামোনই ঝর্ণা অন্যতম। এই ঝর্ণার বিশেষত্ব হলো একই সাথে দু দিক থেকে পানি পড়ে। এইরকম ঝর্ণা বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি আছে বলে মনে হয় না। লামোনই ঝর্ণা ব্যাঙ ঝিরিতে পড়েছে। সাধারণত ঝর্ণার নামগুলো ঝিরির নামানুসারে হয়ে থাকে। সেখানকার স্থানীয় ভাষায় ব্যাঙ কে তুক এবং ঝিরি কে অ বলে। তাই এর নাম তুক অ ঝিরি রাখা হয়েছে।
আবার এই ঝর্ণায় দু দিক থেকে পানি পড়ে বলে খোলা স্থানে চাঁদের আলোয় অন্যরকম সৌন্দর্য বিরাজ করে যার উপর ভিত্তি করে এই ঝর্ণাকে লামোনই ঝর্ণা বলে ডাকা হয়।
অমিয়াখুম
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের পাশে অমিয়াখুম জলপ্রপাতকে দেখা যায় বাংলার ভূস্বর্গ হিসেবে। অপরূপ রুপের পসরা নিয়ে অমিয়াখুম দাঁড়িয়ে আছে বান্দরবনের থানচি উপজেলার নাক্ষিয়াং নামক স্থানে। পাথর আর সবুজে ঘেরা পাহাড়ের গা ঘেষে দ্রুত গতিতে নেমে আসে ঝর্ণাধারা। দুধ সাদা রঙের ফেনা তুলে তা নিমিষেই আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ বলেন অমিয়াখুম হলো সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত।
নাফাখুম
নাফাখুমকে বলা হয় বাংলাদেশের নায়াগ্রা। কারণ নাফাখুম জলপ্রপাতে পানি প্রবল বেগে ছুটে আসে। আর এখানে পানি পড়ার পরিমাণ বেশি। এটি বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত। থানচি বাজার থেকে নৌকা দিয়ে রেমাক্রি গিয়ে নাফাখুম দেখতে হয়। রেমাক্রি থেকে নাফাখুম জলপ্রপাতে যেতে প্রায় তিনঘণ্টা হাঁটতে হয়।