নতুন প্রজাতির পতঙ্গভুক উদ্ভিদ

সুদেষ্ণা ঘোষ

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৯:০৬ এএম

সম্প্রতি সেন্ট্রাল মিন্দানাও ইউনিভার্সিটির একদল জীববিজ্ঞানী ফিলিপাইনের পার্বত্য ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে এক নতুন প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদের উপস্থিতি আবিষ্কার করেন। গবেষক নোয়েল লাগুন্ডের জানিয়েছেন- আপাতদৃষ্টিতে এটিকে কলসপত্রী উদ্ভিদ মনে হলেও বাস্তবে এই উদ্ভিদ ভিন্ন প্রজাতির। এরা নেপেন্থিস পরিবারের গোত্রভুক্ত।

ফিলিপাইনের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ভেনেরাসিও কাবানার নাম অনুসারে এই নতুন প্রজাতির নামকরণ করা হয়েছে- নেপেন্থিস কাবানি। নেপেন্থিস গোত্রভুক্ত ১৭০টি প্রজাতির উদ্ভিদের উপস্থিতি মাদাগাস্কার, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াতে লক্ষ্য করা যায়। এই গোত্রভুক্ত উদ্ভিদদের মধ্যে স্থান বিশেষে সবচেয়ে বেশি ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় বর্নিও, সুমাত্রা এবং ফিলিপাইনে। এই নতুন প্রজাতির নজির পাওয়া গেছে- মালিমুমু, পান্তারণ পর্বতমালা এবং ফিলিপাইনের মিন্দানাও আইল্যান্ডে। 

এই উদ্ভিদ প্রজাতির গঠন বেশ প্রাচীন। এরা বাঁদরের পেয়ালা নামে পরিচিত। কারণ, এই উদ্ভিদের সাহায্য নিয়ে বাঁদরের বৃষ্টির জল পান করতে দেখা গেছে। সব নেপেন্থিস প্রজাতিই মাংসাশী উদ্ভিদ। তারা তাদের শিকার ধরে কলসির মতো আকৃতির পাতার সাহায্যে। অভিযোজনের ফলেই তাদের পাতার এরূপ পরিবর্তন ঘটেছে। উদ্ভিদের মুখগহ্বর থেকে ক্ষরিত সুস্বাদু পানীয়র লোভে পতঙ্গরা আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদের শিকার হয় এবং পিচ্ছিল কলসিগাত্রে পড়ে যায় এবং সেখানে তরল পদার্থের উপস্থিতি তাদের পালাতে বাধা সৃষ্টি করে।

কলসের নিম্নাংশ সূক্ষ্মসূক্ষ্ম রোমে পূর্ণ। উদ্ভিদের দেহগাত্রে এক ধরনের উৎসেচকের উপস্থিতি পতঙ্গদের সত্বর হজমে সহায়তা করে। নেপেন্থিস কাবানির কা- ৬-৮ মিলিমিটার ব্যাসার্ধ যুক্ত এবং ৮ মিলিমিটার লম্বা। পাতাগুলো ২৬.৩-৩৪ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩.২-৪.৬ সেন্টিমিটার প্রস্থ বিশিষ্ট। জীববিজ্ঞানীদের মতে, কম সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে ঝোঁপঝাড়কে আশ্রয় করে এইসব গাছ বিস্তার লাভ করে।

বর্তমানে পান্তারণে বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও গবেষকরা বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ প্রজাতিকে সংরক্ষণের জন্য আইনের সাহায্য নিয়ে বিশেষ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। নেপেন্থিস কাবানি নামক নতুন গোত্র বিশিষ্ট উদ্ভিদের আবিষ্কার প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ফিলিপাইন জার্নাল অব সিস্টেমেটিক বায়োলজিতে, যা বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রাণীজগতে তুমুল সাড়া ফেলেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh