ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ সম্মেলন

সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুবাদের সম্পৃক্তের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২০, ১০:৫৭ পিএম | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০, ১০:৫৯ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুবকদের জন্য স্থিতিশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধারণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তাদেরকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ সোমবার (২৭ জুলাই) বিকেলে দুইদিনব্যাপী ‘ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ সম্মেলনের ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের সময় এ আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি ‘সমতা ও সমৃদ্ধি: একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য’ এই শিরোনামে দুইদিনব্যাপী ‘রেসিলেন্ট যুব নেতৃত্ব শীর্ষ সম্মেলনেরও উদ্বোধন করেন তিনি।

বিশ্বে করোনায় আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ৬ লাখ ৫২ হাজার ৬০৪ জন মৃত্যুবরণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এই মহামারির কবল থেকে মানবতার মৌলিক অস্তিত্ব রক্ষায় বিশ্বব্যাপী আরো সহযোগিতারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যুবকদের স্থিতিশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধারণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে নিজেদের সম্পৃক্ত করার সূবর্ণ সুযোগ রয়েছে। প্রাণবন্ত যুবকরা তা দেখাতে সক্ষম হবে বলে আমরা আশা করি। এটা দেখা যাচ্ছে যে, প্রাকৃতিক পরিবেশের লালিত মানুষ এই মহামারির সাথে ভালোভাবেই লড়াই করছে। তাই আমাদের অবশ্যই দৈনন্দিন জীবনে মৌলিক প্রকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে একোথে কাজ করতে হবে।

কভিড-১৯ সঙ্কট জল স্রোতধারা অভিহিত করে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী মহামারি পরবর্তী ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনের’ জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, কভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন এভাবে হতে পারে- প্রথমত: উদ্বেগের কারণে সুরক্ষাবাদের নামে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আরো নিয়ন্ত্রণ, অভিবাসন ও ভিসা নীতিমালায় আরো কঠোর হতে পারে। তবে এটি মহামারি মোকাবিলার জন্য বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে।

দ্বিতীয়ত: এটা পরিস্কার যে কভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি ২০০৮-২০০৯ এর অর্থনৈতিক সঙ্কটকে ছাড়াবে। তবে নেটওয়ার্কযুক্ত অর্থায়ন ও সম্পদ সৃষ্টির নতুন মাত্রা যোগ করবে।

তৃতীয়ত: এরূপ অর্থনীতির ওপর এতবড় অভিঘাত গত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি। শুধুমাত্র ১০ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্বের সরকারগুলো বিশ্বব্যাপী ১০.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি উদ্বীপনা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলো। এটি আটটি মার্শাল প্ল্যানের সমতুল্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ মহামারি সর্বত্র– সরকার, প্রাইভেট সেক্টর, আন্তর্জাতিক কমিউনিটি ও অন্য নেতাদের কাছে অস্বাভাবিক দাবি জানাচ্ছে। একটি সঙ্কটের সময়ে কি ধরনের নেতৃত্ব প্রয়োজন তা পুননির্ধারিত পরিকল্পনায় হয় না, বরং এই প্রক্রিয়ায় জড়িত মানুষের আচরণ ও মানসিকতায় তা গড়ে ওঠে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জনসংখ্যা ব্যবসা ও কৃষিক্ষেত্রের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে ১২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘোষণা করেছে, যা জিডিপির ৩.৭ শতাংশ। খাদ্যে নিরাপত্তা অর্জন, স্বাস্থ্য ও সেনিটেশন উন্নতি ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ও নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি ওআইসি ও এর সকল সদস্য রাষ্ট্রকে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত এই জনগোষ্ঠীর প্রতি তাদের উদার সহায়তা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা ‘ঢাকা, ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের জন্য আয়োজকদের উষ্ণ অভিনন্দন জানান এবং ঢাকাকে ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০ হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য ইসলামিক কোঅপারেশন ইয়ুথ ফোরামকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) সারা বিশ্বের ১.৮ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের আকাক্ষার প্রতীক।

ওআইসি মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল-ওছাইমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, আজারবাইজানের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী আজাদ রহিমভ, কাতারের সংস্কৃতি ও ক্রীড়া মন্ত্রী সালাহ বিন গনিম আল আলী, , ইসলামিক কো অপারেশন ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি তাহা আইহান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এ সময় বক্তব্য রাখেন।

এর আগে কাতারের সংস্কৃতি ও ক্রীড়া মন্ত্রী ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দোহা থেকে ওআইসি যুব রাজধানী চাবি ঢাকায় হস্তান্তর করেন।

গত ২৫ ডিসেম্বর তুরস্কে ইস্তাম্বুলভিত্তিক ইসলামিক কোঅপারেশন ইয়ুথ ফোরাম (আইসিওয়াইএফ) ঢাকাকে ‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ হিসেবে ঘোষণা করে। -বাসস

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh