জাতীয় কবির ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২০, ০৯:৪৭ এএম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

আজ ১২ ভাদ্র (বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট)। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১৯৭৬ সালের শোকের মাসেই এদিনে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে আলোচনা সভা। বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সকালে একাডেমির পক্ষ থেকে জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

বেলা ১১টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে স্বাগত বক্তৃতা করবেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। একক বক্তব্য দিবেন এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে নজরুলের কবিতা থেকে আবৃত্তি ও নজরুলগীতি পরিবেশনা।

কবি, সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষ নজরুলের মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন, ‘নজরুলের কথা আজ যখনই মনে পড়ে আমাদের, মনে পড়ে মিলনগত এই অসম্পূর্ণতার কথা। আর তখন মনে হয়, বাক শক্তিহারা তার অচেতন জীবনযাপন যেন আমাদের এই স্তম্ভিত ইতিহাসের এক নিবিড় প্রতীক চিহ্ন। যে সময়ে থেমে গেলো তার গান, তার কথা, তার অল্পকিছু আগেই তিনি গেয়েছিলেন, ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে, জাগায়োনা জাগায়ো না।’

রবীন্দ্রনাথকে উদ্দেশ্য করে তার এই কথাগুলো নজরুলকেই ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে শঙ্খ ঘোষ বলেন, ‘তার কথাগুলো আমরা যেন ফিরিয়ে দিতে পারি তাকেই, ‘যেন আমরাই ওগুলি বলছি নজরুলকে লক্ষ্য করে।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সংগীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং ধানমন্ডিতে কবিকে একটি বাড়ি দেন। -বাসস

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh