মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫৯ এএম
মাঠের খেলায় সাম্প্রতিক সময়ে বড় কোনো সাফল্য না দেখাতে পারলেও ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে আবারো আলোচনায় সংগঠনটি।
গত ২০ এপ্রিল নির্বাচনের কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে আর সেটি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কমার কারণে আবারো নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন। বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়া ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে এতটা আলোচনা হয় না। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে নির্বাচনের তফসিল। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই আর উত্তাপের নির্বাচনের সম্ভাবনা একেবারে কম না।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল, নিরুত্তাপ নির্বাচনে অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে যাচ্ছেন কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন গং; কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। কারণ ৭ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন সাবেক ফুটবল তারকা ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। ওই দিন তিনি এক লাখ টাকা দিয়ে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এর ফলেই বাফুফের নির্বাচনী পরিবেশ আমূল পাল্টে গেছে।
কাজী সালাউদ্দিনের সাথে কাজ করা অনেকেই যখন বিরোধী শিবিরে যোগ দিচ্ছিলেন, তখন একটা জমজমাট নির্বাচনের প্রত্যাশা ছিল। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যে প্যানেল তৈরি করা সেই কাজটিও সেরে রাখা হয়েছিল। সভাপতি পদে আলোচিত ফুটবল সংগঠক তরফদার মো. রুহুল আমিনের পাশাপাশি বাদল রায়ের নির্বাচন করার বিষয়টিও সামনে চলে এসেছিল; কিন্তু মাস কয়েক পূর্বে তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেবার পর উত্তাপ কমে গিয়েছিল; কিন্তু বর্তমানে এ পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর ফুটবল থেকে তরফদার নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। নানামুখী চাপে তরফদার যে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচনের মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন সেটা এখন অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেছে, বলে মনে করেন ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। নয়তো ২০১৬ সালে যেখানে কামরুল আশরাফ খান পোটনের মতো একজন নব্য সংগঠক নির্ঝঞ্ঝাটভাবে নির্বাচন করতে পেরেছিলেন, সেখানে তরফদার সেটিও পারলেন না। চার বছর আগে নির্বাচিত হওয়ার পর আর নির্বাচন না করার ঘোষণাও এখন আর আলোচনার রসদ জোগাচ্ছে না।
শফিকুল ইসলাম মানিক ও বাদল রায় শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র ক্রয় করার কারণে কাজী সালাউদ্দিনের এককভাবে জয়ী হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মাঠের ফুটবলের উন্নয়নের চেয়ে এখন চেয়ার দখলে রাখাটাই মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব সংগঠকের জন্য। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফসিএ) সভাপতি এবং বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিডিএফএ) মহাসচিব তরফদার রুহুল আমিনের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়ে চলছে নানামুখী বিশ্লেষণ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটা সংস্থার নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আবার প্রত্যাহার করে নেয়াটা কোনোভাবেই শুভ নয়। এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি ফুটবলের সব কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই বাফুফের নির্বাচনে প্রার্থী হব না।’
আর মনোনয়নপত্র ক্রয় করার পর সাংবাদিকদের বাদল রায় বলেন, ‘আমি নির্বাচন করবো। তাই মনোনয়নপত্র কিনেছি। সবার দোয়া চাই।’