নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৫৩ পিএম | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৫৫ পিএম
ফোন করে ও চিঠি পাঠিয়ে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার হুমকির প্রেক্ষিতে দেশের সকল কারাগারগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি কারাগারে বন্দি জঙ্গি, শীর্ষ সন্ত্রাসী, বিডিআর ও বিভিন্ন সংবেদনশীল মামলায় আটক বন্দিদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে নজরদারির নির্দেশও দেয়া হয়।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল সকালেই দেশের সব ডিআইজি প্রিজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। বিভিন্ন নিরাপত্তার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারা অধিদপ্তর থেকে আইজি প্রিজন স্যারের নির্দেশনা সম্বলিত একটি চিঠি ইস্যু করে সব কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে যেকোনো হামলা প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। লালমনিরহাটের একটি হুমকির বিষয়ে আপনারা অবগত। সে বিষয়সহ নানা রকম বিষয় মাথা রেখে দেশের সব কারাগারে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দেশের কারাগারগুলোতে এ বিষয়ে চিঠি দেন আইজি প্রিজন্স। চিঠিতে সম্ভাব্য হামলা এড়াতে ১৮টি নির্দেশনা দেন তিনি।
চিঠিতে আইজি প্রিজন্স উল্লেখ করেন, সম্প্রতি কিছু দুষ্কৃতিকারী কারাগার থেকে বন্দি জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠায় ও টেলিফোন করে। কারাগার একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। দুষ্কৃতকারীদের অপতৎপরতা নস্যাৎ করে বন্দির পলায়নসহ যে কোনো দুর্ঘটনায় কঠোর হতে কারাগারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রধান দায়িত্ব। সম্প্রতি কিছু কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শৈথিল্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে আগে থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এমতাবস্থায় কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।
আইজি প্রিজন্সের দেয়া নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রতিটি কারাগারে একজন ডেপুটি জেলার, একজন প্রধান কারারক্ষী ও পাঁচজন কারারক্ষীর সমন্বয়ে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠন করে সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিরোধে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে, কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন করতে হবে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে। কারাগারের বাইরের গেটে দায়িত্বপালনকারীদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট নিশ্চিত করে আগতদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি, ডিউটিতে সশস্ত্র সেন্ট্রি নিয়োগ দেয়া, অস্ত্র ও অস্ত্রাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এছাড়াও চিঠিতে তিনি লিখেছেন, কারাগারের অস্ত্রাগার থেকে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে যাতে দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করা যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় মহড়া আয়োজন, কারাগারের চারপাশের সীমানাপ্রাচীর সুরক্ষিত রাখা ও অ্যালার্ম সিস্টেম পরীক্ষা করে প্রস্তুত করে রাখা, কারাগারে আটক জঙ্গি আইএস, শীর্ষ সন্ত্রাসী, বিডিআর ও বিভিন্ন সংবেদনশীল মামলায় আটক বন্দিদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।
যেসব কারাগারে এ ধরনের জঙ্গি বন্দি রয়েছেন সেসব এলাকায় পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষারও নির্দেশ দেন আইজি প্রিজন্স।