নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:১৮ পিএম
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি কর্মকর্তাদের খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাবের একটি খবর নিয়ে যখন সমালোচনার ঝড় বইছে, প্রতিমন্ত্রী বললেন, কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল ভিন্ন কারণে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একটি সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, তাদেরকে বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর প্রস্তাব ছিলো মূলত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের মিডডে মিল কর্মসূচির ব্যবস্থাপনা শিখতে।
উল্লেখ করে জাকির হোসেন এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, যে কোন ক্ষেত্রে শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের গুরুত্ব আছে।
খিচুড়ি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে যেসব সংবাদের জের ধরে সেজন্য সাংবাদিকদের সমালোচনা করেন তিনি। একই সাথে বিএনপিকেও তিনি সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করান।
সংবাদ সম্মেলনে জাকির হোসেন বলেন, আমরা মিডডে মিলের ভালো দিক শেখার জন্য, বিদেশে তাদের ম্যানেজমেন্টটা জানার জন্য, শেখার জন্য, কিভাবে করছে- এই জন্য হয়তো সামান্য কিছু টাকা ডিপিপিতে ধরা আছে।
ডিপিপি হচ্ছে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপ্রোজাল বা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব। কিছুদিন আগে মিডডে মিল নীতি একনেক সভায় পাস হয়েছে, এবং বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এই যে মিডডে মিল চালায় তারা, কিভাবে চালায়? সরকার চালায়, না সরকারের আর কেউ চালায়? যেমন আমি কেরালায় দেখেছি, সরকারের সামান্য কন্ট্রিবিউট আছে, বাকিটা ওইখানকার সোসাইটি করে। আমাদের এখানে তো পুরোটাই সরকার চালায়। এ কারণেই এই ব্যবস্থাপনাগুলো দেখার জন্য প্রশিক্ষণের প্রস্তাব, বলেন তিনি।
এ অর্থ ব্যয় কোনো অপচয় নয় বরং অভিজ্ঞতা অর্জনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাটা রাখা জরুরি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার দরকার আছে কি নাই? আজকে আমরা ইংরেজির জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলকে দিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েকে গড়ার চেষ্টা করছি, গণিত অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে অঙ্ক শিক্ষার ব্যবস্থা করতেছি। উচ্চতর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে প্রতিটা মানুষের জন্য।
ওই বক্তব্যের সমর্থনে তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমি যা ছিলাম, এই সময়ের মধ্যে সচিব সাহেব এবং আপনাদের (সাংবাদিকদের) সাথে মেলামেশায় আমার কি জ্ঞান বাড়ে নাই? প্রত্যেকেরই সিনিয়রদের কাছ থেকে কিছু শিখবার আছে। যে কারণে এই বিষয়ে কিছু টাকা ধরা আছে, এটা বিশাল কোন ক্ষতিকর ব্যাপার নয়।
তবে তিনি বলেন, তারপরেও আমাদের এটা প্রস্তাব, এখন এটা আরো উচ্চতর জায়গায় যাবে, পরিকল্পনা কমিশন আছে, একনেক আছে, তারা দেখবে। এটা তারা তারপর সংস্কার করবে। এটা নিয়ে হইচই করার মত কোন অবস্থা নাই।
খিচুড়ি বিতর্ক ইস্যুতে আরেকটি সমালোচনা ছিলো প্রস্তাবিত কর্মকর্তার সংখ্যা নিয়ে। যেসব গণমাধ্যমের খবরের সূত্র ধরে বিতর্ক হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে সেখানেই এই কর্মকর্তাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় এক হাজার। কিন্তু এই তথ্য ভুল উল্লেখ করে জাকির হোসেন বলেন, প্রাথমিক প্রস্তাবে প্রশিক্ষণের জন্য ৫০০ কর্মকর্তাকে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল।
এখানে এই সংখ্যা নির্ধারণের ব্যাখ্যায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের থানার সংখ্যা ৫০৯, এখন যেহেতু থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছিল, তখন ৫০০ কর্মকর্তাকে পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এরপর পরিকল্পনা কমিশন সেটা সংশোধন করে দুইটি টিম বা দলে পাঠাতে বলেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন দুই টিমে কতজন যাবে সেটা ঠিক হয় নাই, পাঁচজন পাঁচজন দশজন হতে পারে, আবার এগারো এগারো ২২ জনও হতে পারে।