মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪৬ এএম | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪৭ এএম
ছবি: মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
অনেক বছর পর খরস্রোতা পদ্মা নদীর স্রোতের প্রবাহ ঘুরেছে। ফলে পদ্মা নদীর মাঝে দীর্ঘ বছর আগে জেগে ওঠা চর ভাঙতে শুরু করেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ দল শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুট পরিদর্শন করে এমন কথা বলেছেন।
ড্রেজিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত একাধিক প্রকৌশলীর মতে, পদ্মা সেতুর খুঁটি স্থাপনে নদীর স্রোতের প্রাবহ ঘুরেছে। ফলে নদীর মাঝে জেগে ওঠা চর চলতি বছর ভাঙতে শুরু করেছে। নৌ-চ্যানেলে স্বাভাবিক রাখতে গত ৫ বছর ধরে প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৩ লাখ ঘন ফুট পলি অপসারণ করা হচ্ছে।
প্রকৌশলীরা জানান, চলতি বছর ভাঙনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে একদিকে পলি অপসারণ করলেও চর ভেঙে আবারো চ্যানেলে নাব্যতা সংকট হচ্ছে। তাই গত চারমাস ধরে ড্রেজিং কার্যক্রম চালালেও নাব্যতা সংকট থেকেই যাচ্ছে।
অন্যদিকে শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। গত চারমাস ধরে নাব্যতা সংকটে ফেরি বন্ধ ও চালুর খেলায় গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দফা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের পর মঙ্গলবার থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরত্বের পালের চর চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল শুরু করলেও ফেরি চলাচলে বিপর্যয় কাটানো সম্ভব হয়নি এখনো।
মঙ্গলবার দুপুরে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ফেরি ক্যামেলিয়া কাঁঠালবাড়ী ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও অপর কোনো ফেরি চলাচল করেনি। পালেরচর চ্যানেলে ফেরি চালু হওয়ায় দুর্ভোগ লাঘব হবে এমন আশা করলেও নামেমাত্র ফেরি চলাচলে কোনো উপকারই হচ্ছে না সাধারণ যাত্রীদের।
বিআইডব্লিউটিসির এজিএম মো.শফিকুল ইসলাম জানান, ফেরিবহরে থাকা ১৩টি ফেরির মধ্যে চলছে মাত্র একটি ফেরি। চ্যানেলটি কার্যকরি নয় বলে ফেরি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবার দুপুরে ছেড়ে যাওয়া ফেরি ক্যামেলিয়া ৪ ঘণ্টায় কাঁঠালবাড়ী ঘাটে পৌছে। বুধবার সকাল ৭টার দিকে কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে রো রো ফেরি বীর শ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ১১টি পণ্যবাহী ট্রাকসহ ২১টি যানবাহন নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান জানান, নতুন চ্যানেল চালুর চেষ্টা চলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন চ্যানেল চালু করা সম্ভব হবে এবং পদ্মার ভাঙন তাণ্ডবে শিমুলিয়া ঘাটের ৩ নম্বর ফেরিঘাটটি এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, ২৮ কিলোমিটার পথ ঘুরে পালেরচর চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল করায় একদিকে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে অপরদিকে গন্তব্যে যেতে ফেরির ৪ ঘণ্টা সময় লাগছে।
শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, ফেরি চলাচলে বিপর্যয় দেখা দেয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৮৭টি লঞ্চ ও সাড়ে ৪শ' স্পিডবোটে চড়ে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।