ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১০ এএম | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৩৩ এএম
করোনা লকডাউনের জেরে রেকর্ড জিডিপি পতন হয়েছে নিউজিল্যান্ডে। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে সব মিলিয়ে প্রায় ১২ দশমিক দুই শতাংশ জিডিপির পতন হয়েছে বলে দেশের সরকার জানিয়েছে।
তবে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, তাদের আশঙ্কা ছিলো, ১৬ শতাংশ জিডিপির পতন হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর কিছু আর্থিক সংস্কার সেই পতন আটকে দিতে পেরেছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর কঠিন লকডাউন আইন বলবৎ করেছিল নিউজিল্যান্ড। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল দেশের প্রতিটি সীমান্ত। দেশের ভিতর প্রায় সমস্ত কাজকর্ম কিছুদিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। বস্তুত, নিউজিল্যান্ডই প্রথম দেশ যারা করোনামুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করেছিল। পরে অবশ্য অকল্যান্ডে নতুন করে করোনা ফিরে আসে।
গত ১৫ মার্চ ১০০ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লেও নিউজিল্যান্ডে তখনো এ রোগে কেউ মারা যায়নি৷ ২৫ মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী৷ সেদিন জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেছিলেন, ‘শুরু থেকেই কঠোর হতে হবে আমাদের৷’ তারপর লম্বা সময় ফার্মেসি, মুদির দোকান, হাসপাতাল আর গ্যাস স্টেশন ছাড়া সব বন্ধ রাখা হয়৷ করোনামুক্ত হওয়ার পরও সীমান্ত বন্ধ রেখেছে দেশটি৷
মে মাস পর্যন্ত কঠিন লকডাউন আইন চালু ছিলো সেখানে। মে মাসের শেষ দিক থেকে ধীরে ধীরে তা শিথিল করা হয়। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের অর্থনৈতিক হিসেব হয়েছে ৩০ জুন পর্যন্ত। অর্থাৎ, দ্বিতীয় কোয়ার্টারের অধিকাংশ সময়টাই লকডাউনের মধ্যে ছিলো।
এদিকে, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মে মাসে অর্থমন্ত্রীর আশঙ্কা ছিল দ্বিতীয় কোয়ার্টারে জিডিপির পতন ২৩ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। পরে অবশ্য সরকার হিসেব করে দেখেছিল তা ১৬ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখা সম্ভব। তবে শেষ পর্যন্ত যে হিসেব মিলেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ১২ দশমিক দুই শতাংশ জিডিপির পতন হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে যা অভূতপূর্ব। এই পতনের জেরে আর্থিক মন্দার মধ্যেও ঢুকে গিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
তবে এই পতন নিয়ে চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পর্যটনসহ একাধিক শিল্প গত কয়েক মাসে নিউজিল্যান্ডে কার্যত বন্ধ হয়েছিলো। ফলে এই আর্থিক মন্দা শুরু হয়েছে। জুনের পর থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন শিল্পে উৎপাদন শুরু হয়েছে। পর্যটন ব্যবসাও ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে। ফলে আগামী দিনে নিউজিল্যান্ড এই মন্দা থেকে বেরিয়ে আসবে বলেই তাদের অভিমত। শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দেশের প্রধানমন্ত্রীর অভূতপূর্ব আর্থিক সংস্কারই এই কঠিন পরিস্থিতি থেকেও নিউজিল্যান্ডকে উদ্ধার করতে পেরেছে। আর্থিক সংস্কার না হলে জিডিপির পতন দ্বিগুণ হতে পারতো।
হিসেব বলছে, আপাতত বার্ষিক হিসেবে নিউজিল্যান্ডের জিডিপির পতন হয়েছে দুই শতাংশ। অন্যান্য দেশের তুলনায় যা তত বেশি নয়। অ্যামেরিকা, চীন, জাপান সহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ আর্থিক মন্দায় ঢুকে গিয়েছে। জিডিপির রেকর্ড পতন হয়েছে সর্বত্রই। ভারতের জিডিপি মাইনাস ২৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে নিউজিল্যান্ড অনেকের চেয়ে ভালো সামলেছে করোনা পরিস্থিতি।- ডয়েচ ভেলে