মানি লন্ডারিংয়ে যুক্ত বিশ্বের বড় ব্যাংকগুলো
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:৪৯ পিএম | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:৫০ পিএম
নতুন এক কেলেংকারি সামনে এসেছে। যাকে বলা হচ্ছে ফিনসেন ফাইল। বিশ্বের বড় বড় ব্যাংক এই কেলেংকারির সাথে জড়িত।
বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে ফিনসেন ফাইল। প্রায় আড়াই হাজার পাতার এই ফাইলের তথ্য বলছে, বিশ্বের একাধিক বড় ব্যাংক জেনেশুনে মানি লন্ডারিং বা বেআইনি আর্থিক লেনদেনের সাথে যুক্ত ছিল। জার্মানির ডয়চে ব্যাংক থেকে হংকং সাংহাই ব্যাংক (এইচএসবিসি) সবাই এই বেআইনি কাজ করেছে।
এদিকে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জালিয়াতির বিষয় জানার পর বিশ্বজুড়ে কয়েক কোটি ডলার স্থানান্তর করার অনুমতি দেয় এইচএসবিসি ব্যাংক। যুক্তরাজ্যের বহুজাতিক অর্থলগ্নিকারী ব্যাংক তার মার্কিন ব্যবসায়ের মাধ্যমে ৮ কোটি ডলার হংকংয়ে এইচএসবিসির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালে এই স্থানান্তরের ঘটনা ঘটে।
২০১৩ সালে কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধ অর্থ পাচারের দায়ে এইচএসবিসিকে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন (১৯০ কোটি) ডলার জরিমানা ধার্য করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরপরই পঞ্জি স্কিমের ঘটনা ঘটে। তবে এইচএসবিসি বলছে তারা সব সময় আইন মেনেই অর্থ স্থানান্তর করে।
গোপন নথির কথা জানিয়ে এমন দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক (ফিনসেন)।
ফিনসেন জানিয়েছে, তাদের হাতে দুই হাজার ৬৫৭টি নথি রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ১০০টি সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপের প্রতিবেদন (এসএআরএস)।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীর সমস্ত ব্যাংককে দেখতে হয় তাদের ক্রেতারা যে অর্থ ব্যাংকে রাখছেন বা ব্যাংকের মাধ্যমে অন্য কোথাও পাঠাচ্ছেন, তার উৎস কী? অর্থাৎ যে অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হচ্ছে, তা বৈধ কি না।
ফিনসেন ফাইলের তথ্য বলছে, ডয়চে ব্যাংক, এইচএসবিসির মতো ব্যাংকগুলো জানতো- তাদের ব্যাংকের মাধ্যমে বেআইনি অর্থ, বা অবৈধ অর্থ লেনদেন হচ্ছে। তা সত্ত্বেও তারা তা পাচার হতে সাহায্য করেছে। মূলত পঞ্জি স্কিমের অর্থ এভাবে পাচার হয়েছে। যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র- বিশ্বের বহু উন্নত দেশ এই ঘটনার সাথে যুক্ত। বেশ কিছু ক্ষমতাবান ব্যক্তিও এর সাথে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
শুধু এইচএসবিসি ব্যাংক থেকেই প্রায় দুই ট্রিলিয়ান মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ডয়চে ব্যাংক থেকে পাচার হয়েছে এক ট্রিলিয়ান ডলার। পঞ্জি স্কিমের টাকা এভাবে নয়ছয় হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। গোটা বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ার পরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য আইনি ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তো বটেই, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। -ডয়চে ভেলে ও বিবিসি