কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৪৫ পিএম
কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অপরাধ কর্মের ইন্ধনদাতা চিহ্নিত করে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরাে ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর ) কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি করেছেন কারামুক্ত সাংবাদিক ফরিদুল মােস্তফা খানের ছােট বােন ফাতিমা খানম।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম খান মামলাটি রেকর্ড করেন। মামলায় অপহরণ, ডাকাতি, জোরপূর্বক স্ট্যাম্প আদায়সহ বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের অভিযােগ আনা হয়েছে ।
আসামিরা হলেন- টেকনাফের হ্নীলা ফুলের ডেইলের মৃত তজর মুল্লুকের ছেলে আবুল কালাম প্রকাশ আলম, হ্নীলা নয়া বাজার পশ্চিম সাতঘরিয়া পাড়া এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মফিজ আহমদ ইকবাল প্রকাশ গুটি মফিজ, ফুলের ডেইলের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে জহিরুল ইসলাম, একই এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে দলিলুর রহমান, পানখালীর মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে সরওয়ার কামাল, ফুলের ডেইলের শরাফত আহমদের ছেলে নুরুল আবছার ও মৃত আবুল বশরের ছেলে রফিকুল ইসলাম।
মামলায় বাদী ফাতেমা খানম অভিযােগ করেন, আসামিরা পরস্পর যােগসাজশে মাদকের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে ক্ষীপ্ত হয়ে ওসি প্রদীপদের সাথে আঁতাত করে গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে তার বড় ভাই সাংবাদিক ফরিদুলকে অস্ত্রের মুখে তুলে এনে নির্যাতন চালায়। এরপর সাজানাে মামলা দিয়ে সাংবাদিক ফরিদুলকে কারাগারে পাঠানাের পর তারা পরস্পর যােগসাজশে বাদীর কক্সবাজার শহরের কুতুবদিয়া পাড়ার বসতবাড়িতে ২৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আকস্মিকভাবে বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে । এ সময় তারা বাদীর অপর এক বােনকে লােহার রড দিয়ে আঘাত করে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে মাটিতে ফেলে রাখে। আসামিরা ঘটনার রাতে বাদী এবং তার ছােট বােনের পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৭৫ হাজার টাকা, দুটি মােবাইল সেট ও বাড়ির জরুরি কাগজপত্র লুট করে। এরপর আসামিরা বাদীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তিনশত টাকার একটি নন-জুডিশিয়াল খালি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। এমনকি ঘটনার বিষয়ে কাউকে বললে পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
বাদীর মতে, আসামিরা টেকনাফ থানার সাবেক ওসির দালাল, মাদক ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাদী ও তার পরিবারকে নজরদারিতে রাখার পাশাপাশি বড় ভাই সাংবাদিক ফরিদুল মােস্তফা কারাগারে থাকা এবং প্রশাসনিকভাবে অনুকূল পরিবেশ থাকায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়।
কক্সবাজার থানা পুলিশ জানিয়েছে, সংঘতিত ঘটনায় বিলম্ব হলেও মামলা রেকর্ড হয়ে যাওয়ায় আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
অপরদিকে সদ্য কারামুক্ত সাংবাদিক ফরিদ এ ব্যাপারে জানান, প্রদীপ বাহিনী আমাকে তুলে এনে ছয়টি মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১১ মাস পাঁচ দিন আমি কারাগারে ছিলাম। এরপরও মাদক ব্যবসায়ীরা আমার পরিবারের উপর কী করেছে, তা আমি দেখিনি। আমি প্রদীপ গংদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আশা করি শিগগিরই ন্যায় বিচার পাবো। কারণ কেউ তাে আইনের ঊর্ধ্বে নয়।