জাতীয় কন্যা শিশু দিবস
ইয়ারা যোহারীন
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:১৭ এএম
মডেল: সিমরিন লুবাবা
আজ ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যা শিশু দিবস। এমন এক সময়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে যখন কন্যা শিশুর বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। শিশুদের জন্য যে সমাজ আমরা তৈরি করেছে তা মোটেও নিরাপদ নয়। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র- কন্যাদের জন্য নিরাপদ করতে পারছি না। আর তাই নিরাপত্তার জন্য ঘর থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। শৈশবেই কন্যাকে বুঝাতে হবে গুড টাচ ও ব্যাড টাচের ধারণা, শেখাতে হবে আত্মরক্ষার কৌশল (বর্তমানে যা ইউটিউব দেখেও শেখা যায়)।
কন্যা শিশুর অভিভাবকের মনে রাখা দরকার, কন্যা কোনো অংশে পুত্রের চেয়ে কম নয়। সঠিক ডায়েট, ব্যায়াম, শিক্ষার মাধ্যমে পুত্রের চেয়ে বেশি গর্বের কারণ হতে পারে কন্যা। শুধু পুতুল আর হাড়িপাতিল না দিয়ে কন্যাকে মশগুল রাখুন সৃজনশীল খেলা ও কাজে। চার দেয়ালের বাইরের পৃথিবীটা চিনতে সহযোগিতা করুন। কারণ, শিশুর ব্যক্তিত্ব ঘর থেকেই গড়ে উঠে। ভবিষ্যতের একজন স্বনির্ভর ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী হিসেবে দেখতে চাইলে অভিভাবকদের পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। কন্যার চাহিদা যেন প্রসাধনী কিংবা সৌন্দর্য উপকরণে আটকে না থাকে। জ্ঞানপিপাসু করতে তাকে উপহার দিন বই। মানবতাবোধ শিক্ষা দেয়াটাও জরুরি, সবার প্রতি সহনশীলতা ও ভালবাসা থাকতে হবে। কন্যাশিশু যেন আত্মকেন্দ্রিক না হয়, তাকে ভালবাসতে শিখতে হবে, পারস্পারিক হিংসা প্রতিযোগিতার বদলে কন্যাকে মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। সাহসের সাথে এগিয়ে যেতে জানতে হবে, অন্যের উপর নির্ভরশীলতা নয় বরং নিজের প্রত্যেকটা কাজ নিজেকে করতে হবে। দৃঢ় মানসিক শক্তির অধিকারী হিসেবে গড়ে উঠলে কন্যার জীবন হবে সুন্দর ও নিরাপদ।
আমাদের দেশে শিশুদের নিজের কাজ নিজেকে করতে দেই না। কিন্তু হাঁটা ও কথা বলা শেখামাত্র ছোট ছোট কাজগুলো শিশুটিকে করতে দিন, যাতে সে আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে। শিশুরা নিজের কাপড় নিজেই যেন গুছিয়ে রাখতে পারে, পরিষ্কার করতে পারে নিজের খাবার প্লেটটি- সেভাবেই তাদের গড়ে তোলা দরকার।
সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল এবং ট্যাবের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কেড়ে নিচ্ছে অনেক কন্যার শৈশব। তাদেরকে ভার্চ্যুয়াল জীবনের বাইরে এনে খেলাধুলা, শরীরচর্চা, সংস্কৃতি ও বিনোদনে আগ্রহী করা প্রয়োজন। মনে রাখবেন, আপনার কন্যাটি ঠিক তেমন গড়ে উঠবে, যেমন আপনি চাইবেন। পৃথিবীর সব কন্যাশিশু সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক, বড় হয়ে একেকজন স্বনির্ভর নারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক- এ প্রত্যাশা রইল।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, ইনভিশন একশন রিওয়ার্ড এসেট (ইয়ারা)