দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হওয়া আরো মারাত্মক হতে পারে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২০, ০৯:০১ এএম

করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠার পর আবার সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তির শরীরে এর উপসর্গ আরো বেশি মারাত্মক রূপ নিতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে।

দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো পুনরায় সংক্রমিত এক ব্যক্তির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

নেভাদার ২৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ৪৮ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমিত হন। প্রথমবারের তুলনায় দ্বিতীয় দফায় তার সংক্রমণ ছিল আরো মারাত্মক। তাকে হাসপাতালে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল। পুনরায় সংক্রমণ বিরল হলেও তিনি এখন সুস্থ হয়ে ওঠেছেন।

প্রতিবেদনে বিশ্বের আরো চারটি পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরা হয়। বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, হংকং ও ইকুয়েডরে একজন করে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয় এতে তুলে ধরা হয়। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব এই মহামারির বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করবে তার ওপর পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া ভ্যাকসিন খোঁজার প্রক্রিয়ার ওপরও এটি প্রভাব ফেলতে পারে। সার্স কভিড-২ ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির শরীরে ইমিউনিটি কতোক্ষণ স্থায়ী হতে পারে এবং কেন দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ আরো মারাত্মক রূপ নিতে পারে তা বুঝতে আমাদের আরো গবেষণা প্রয়োজন।

তবে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, বিশ্বে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা খুবই কম।

ল্যানসেট সংক্রামক রোগ নিয়ে করা গবেষণায় ভাইরাস সংক্রমণ থেকে কতটা প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। নেভাদারের ওই রোগীর কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা প্রতিরোধ ক্ষমতার কোনো ত্রুটি ছিল না যা তাকে বিশেষত কভিডের জন্য দুর্বল করে তুলবে।

কভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পর তার কি কি হয়েছিল:

২৫ মার্চ - গলা ব্যথা, কাশি, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।

১৮ এপ্রিল - প্রথমবারের পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ে।

২৭ এপ্রিল - প্রাথমিক লক্ষণগুলো থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠেন।

৯ ও ২৬ মে – পরপর দুইবার ভাইরাস পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়েনি।

২৮ মে - আবার জ্বর, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, কাশি, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।

৫ জুন – দ্বিতীয়বারে করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ ফল পান এবং শ্বাসকষ্টসহ হাইপোক্সিক (রক্তের অক্সিজেন পরিমান) কমে যায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা সংক্রমণটি সুপ্ত হয়ে যাওয়ার পরিবর্তে আবার ফিরে এসেছে এবং ওই রোগী দ্বিতীয়বারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসের জিনগত কোডগুলো তুলনা করে দেখিয়েছেন যে প্রতিটি সংক্রমণ লক্ষণগুলো খুবই স্বতন্ত্র ছিল।

নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মার্ক পান্ডোরি বলেন, আমাদের পাওয়া ফলাফলগুলোতে দেখা গেছে পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠলেই ভবিষ্যতের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবে না। ফের সংক্রমণের সম্ভাবনা আমাদেরকে কভিড-১৯ সম্পর্কে আরো জানতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

তিনি বলেন, এমনকি যারা কভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদেরও সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার নির্দেশনা মেনে চলা উচিত।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh