সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২০, ১০:৩৫ পিএম
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের দুই শিশুসহ একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত শাহিনুরের ভাই রায়হানুল ইসলাম সিআইডি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতি।
আজ বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিআইডি পুলিশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক ওমর ফারুক বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, কোমল পানীয়ের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তার ভাই, ভাবি ও দুই শিশুসহ পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। ভাই ও ভাবির মানসিক নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে হত্যা করে আসামি। নিহতের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম রিমান্ডে এ ধরনের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, রায়হানুল বেকার জীবনযাপন করত। ভাইয়ের সংসারে বেকার যুবক রাইহানুল ইসলাম প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতনের শিকার হতো। এমনকি ভাই ও ভাবী খাওয়ার জন্য তাকে খোটাও দিত। ঘটনার দিন রাতে ভাই তাকে গালিগালাজ করে। যার কারণে রাইহানুল ভাই ও ভাবিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আর তাই কোমল পানীয়ের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে খাওয়ানো হয়। এরপর রাতে ঠান্ডা মাথায় ধারালো চাপাতি দিয়ে আপন ভাই শাহিনুর ইসলামকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে রায়হানুল। এরপর ভাবি সাবিনা খাতুনকে হত্যা করার সময় তাদের দুই শিশু সন্তানের ঘুম ভেঙে গেলে তাদেরও হত্যা করে রায়হানুল। এসময় বেঁচে যায় তাদের চার মাস বয়সের শিশু মারিয়া।
তিনি বলেন, রায়হানুলের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল হেলাতলা ইউনয়নের খলিসা গ্রামের একটি পুকুর থেকে আজ দুপুরে এ হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতিও উদ্ধার করা হয়েছে। রায়হানুলকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিকেলে সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকা অভিযোগে গতকাল বিকেলে আরো তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে এ মামলায় চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হলো। গ্রেফতার তিনজন হলেন- উপজেলার খলিসা গ্রামের আবদুর রাজ্জাক, একই গ্রামের আবদুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) ভোররাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে মৎস্য হ্যাচারি মালিক শাহিনুর, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে তাসনিম সুলতানাকে জবাই করে হত্যা করা হয়।