তুরস্কে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১১:৫১ এএম

ছবি: আল জাজিরা

ছবি: আল জাজিরা

তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আর আহতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। এছাড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তুপে কতজন আটকে আছে তা এখনো জানা যায়নি।

তুরস্কের বিপর্যয় ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) হতাহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। 

অপরদিকে তুরস্কের প্রতিবেশী গ্রিসেও কম্পনটি আঘাত হানে। সেখানে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই দেশ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২৬ জন।

গতকাল শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুরে এজিয়ান সাগর উপকূলে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭। গ্রিসের সামোস দ্বীপের কারলোভাসি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। ইস্তাম্বুল ও এথেন্সেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর অন্তত ৩৮৯টি আফটার শক হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্তত ৩৩টি ছিল ৪ মাত্রার বেশি। 

তুরস্কের অ্যাজিয়ান সাগরতীরবর্তী পর্যটন এলাকা ইজমিরে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখানে সুউচ্চ ভবন রয়েছে। ভূমিকম্পে অনেক ভবন ধসে গেছে। ইজমিরের রাস্তায় ভবনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

১২টি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকেপড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা। এর মধ্যে চারটি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইজমিরের গভর্নর ইয়াভুজ সেলিম কসগর। তিনি বলেন, ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর তুরস্কের উপকূলবর্তী শহর ইজমিরে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন লোকজন। এটি তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ।

এদিকে ভূমিকম্পের কারণে সামোস দ্বীপতীরবর্তী অ্যাজিয়ান সাগরে ছোট আকারে সুনামি সৃষ্টি হয়েছে। সাগরে জলোচ্ছ্বাসের কারণে তুরস্কের পশ্চিম উপকূলের একটি শহরে রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু জানিয়েছেন, ইজমিরের বেয়ারাকলি ও বোরনোভা জেলায় ছয়টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। উসাক, ডেনিজলি, মনিসা, এডেন, মুগলার মতো সংলগ্ন প্রদেশগুলিত সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, সেগুলোতে লোকজনকে ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে আটকদের বের করে আনার চেষ্টা চালাতে দেখা গেছে।

গ্রিসের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সামোস ও অন্যান্য দ্বীপের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। সেইসাথে পাথর গড়িয়ে পড়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। তবে গ্রিসের চেয়ে তুরস্কে কম্পনের তীব্রতা বেশি থাকায় দেশটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় গ্রিস ও তুরস্ক অবস্থিত। ন্যাটোর সামরিক জোটের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশী দুই দেশ চিরশত্রু।

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস টুইটে বলেন, আমাদের মধ্যে যত মতবিরোধই থাক এটাই একসাথে থাকার সময়। তুরস্কের রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান টুইটে প্রতি উত্তরে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, কঠিন সময়ে প্রতিবেশী দুই দেশের সংহতি খুবই মূল্যবান। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh