ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৫৬ এএম
ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) বলতে অনেকেই পেটব্যথা বোঝেন, আবার অনেকে মনে করেন আমাশয়। আসলে কিন্তু একেবারেই তা নয়। আইবিএস এমন এক রোগ, যা হয়তো আপনারই আছে; কিন্তু আপনি জানেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি যে খুব মারাত্মক অসুখ, তা নয়। এটি প্রাণঘাতীও নয়। তবে আইবিএস যার আছে, তাকে আজীবনই ভুগতে হয়। তাই নিয়ম মেনে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাটা বাঞ্ছনীয়।
কীভাবে বুঝবেন
কেউ হয়তো সকালে নাস্তা করলেন। কিছুক্ষণ পরই পেটটা মোচড় দিয়ে উঠল। তিনি টয়লেটে গেলেন, পায়খানাও করলেন; কিন্তু পেট পরিষ্কার হলো না। কিছুক্ষণ পর আবারো টয়লেটে গেলেন। খাওয়ার আগে-পরে মিলিয়ে দেখা যায়, কোনো রোগী হয়তো চার-পাঁচ বার বা তারও বেশি টয়লেটে যান। এমনকি এটি বাড়তে বাড়তে একসময় সারাদিন ধরে টয়লেটে আসা-যাওয়ায় কেটে যেতে পারে।
কোনো রোগী, যার শরীরে অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে না, ওজন কমছে না; কিন্তু তিনি ছয় মাস বা তারও বেশি সময় ধরে এমন সমস্যায় ভুগছেন- ধরে নেয়া হয়, তিনি আইবিএসে ভুগছেন।
কাদের, কেন এ রোগ বেশি হয়
আইবিএস রোগে আক্রান্ত হওয়ার নিশ্চিত কোনো কারণ এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। উপসর্গের ওপর ভিত্তি করেই আইবিএসের চিকিৎসা করা হয়। তবে বয়সে তরুণ ও মেয়েদের আইবিএসে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। সামাজিক-মানসিক চাপ এ রোগের ক্ষেত্রে ভীষণ প্রভাব ফেলে। দেখা গেছে, মানসিক চাপে থাকা রোগীদের আইবিএস অনেক বেড়ে যায়। তাই ঘরে ও কর্মস্থলে চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। নারীদের আইবিএস থাকার সম্ভাবনা দ্বিগুণ, যার অন্যতম কারণ হলো হরমোনের পরিবর্তন। ঋতুচক্র চলাকালীন বেশিরভাগ নারীর মধ্যে এর লক্ষণ প্রকটভাবে দেখা যায়।
খাদ্যাভ্যাসে বদল আবশ্যক
আইবিএস নিয়ন্ত্রণে খাবার-দাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রচুর মানুষকে তাদের দৈনন্দিন ডায়েট থেকে ল্যাক্টোজ, উচ্চ ফ্রুক্টোজ, বাদ দিতে হয়। সাধারণভাবে ভাত, ওটস, ভুট্টা, খাওয়া যেতে পারে; কিন্তু গম, বার্লি এড়িয়ে চলতে হবে। ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, মুগ ডাল, সবুজ ছোলা, মটরশুটি খাওয়া যেতে পারে; কিন্তু স্বল্প মাত্রায়। দই, বাটারমিল্কও ভালো।
তবে এড়িয়ে চলতে হবে রেড মিট, প্রোসেসড মিট, বাদাম, ছোলা, মসুর ডাল এবং দুধ ও ল্যাক্টোজ জাতীয় খাবার। স্বল্পমাত্রায় তেল, ঘি খাওয়া যেতে পারে। বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁয়াজ, রসুন ও বিনসে এক ধরনের কড়া গন্ধ আছে, যাতে উপসর্গ বাড়তে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
আঙুর, স্ট্রবেরি, আনারস, পেঁপে, কলা প্রভৃতি ফল বেশি পরিমাণে খেলেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে একজন মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন না ডায়রিয়ায়, তার উপসর্গের ওপর নির্ভর করে তাকে ফাইবার জাতীয় খাবার বেছে নিতে হবে।
এত খাবার ডায়েট থেকে বাদ দিলে পুষ্টির ঘাটতিও দেখা দিতে পারে। তাই অভিজ্ঞ ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের মাধ্যমে ডায়েট চার্ট নির্ধারণ করে নেয়াটাই শ্রেয়।